বর্ধমান

রাজতন্ত্রের অবসান ঘটেছে বহু বছর আগে কিন্তু আজও রাজ পরিবারের নিয়মে দোল পূর্ণিমার পরের দিন রং এবং আবিরে রঙিন হয়ে ওঠে বর্ধমানের আকাশ

রাজতন্ত্রের অবসান ঘটেছে বহু বছর আগে কিন্তু আজও রাজ পরিবারের নিয়মে দোল পূর্ণিমার পরের দিন রং এবং আবিরে রঙিন হয়ে ওঠে বর্ধমানের আকাশ

ঐতিহ্য হচ্ছে এমন কিছু যা যুগ যুগ ধরে কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে টিকে রয়েছে, এটা হতে পারে কোন অভ্যাস, আচার-অনুষ্ঠান, প্রথা বা এমন কোন স্থাপনা যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে।আর এই ঐতিহ্য আজও বয়ে নিয়ে চলেছে বর্ধমান রাজ পরিবার । রাজতন্ত্রের অবসান ঘটেছে বহু বছর আগে। প্রায় অস্তিত্বহীন রাজ পরিবার ৷

কিন্তু আজও পুরোনো ঐতিহ্য বজায় রেখে দোলের পরের দিন রং খেলেন বর্ধমানবাসী ৷ আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা, রাত পোহালেই আট থেকে আশি মেতে উঠবে দোল উৎসবে ।গোটা বাংলা জুড়ে আজ চলছে দোলের উত্‍সব, বসন্তের হওয়ায় রঙিন হতে নেমে পড়েছেন সকলে। দোলের আনন্দে মাতোয়ারা বাংলার সমস্ত প্রান্ত।

কিন্তু বর্ধমানের চিত্রটা ব্যতিক্রম। দোলের দিন রঙের ধারে পাশেও যাবেন না এখানকার মানুষজন। বর্ধমান রাজার এই প্রথা অনুযায়ী আজও অটল বর্ধমানবাসী। রাজ পরিবারের নিয়ম মেনে হয় আবির বা রং খেলা।

তত্‍কালীন বর্ধমানের মহারাজ মহাতাব চাঁদ ছিলেন অবাঙালি। তাদের কূলদেবতা ছিলেন লক্ষীনারায়ণ জিউ। এই লক্ষ্মীনারায়ণ জিউয়ের মন্দিরে দোল পূর্ণিমার দিন দেবতার পুজো দেওয়ার পর তাদের পায়ে রং দেওয়া হয়। তবে রাজবাড়ীর এই মন্দিরে হোলিকে ঘিরে হত নানান উত্‍সব, আচার-অনুষ্ঠান। এইসব করতে করতে গড়িয়ে যেত বেলা। প্রজাদের সেদিন আর রং খেলা হত না।চারশো বছর ধরে চলে আসা রাজ আমলের প্রথা আজও কঠোরভাবে মেনে চলেন বর্ধমানের বাসিন্দারা। ঠাকুরের পায়ে আবির না দেওয়া পর্যন্ত রঙের আনন্দ থেকে দূরেই থাকেন তাঁরা।

রাজ পুরোহিতের সাথে কথা বলে জানা যায়,দীর্ঘ দিন থেকে এই প্রথা চলে আসছে, দোলের দিন শুধু ঠাকুরের দোল, পরের দিন বর্ধমানের আপামর মানুষের দোল। এদিন দেবতার পায়ে আবির নিবেদন করা হয়। পরের দিন দোল খেলার প্রথা আজও রয়ে গেছে। দোলপূর্ণিমায় শুধু ঠাকুরের দোল, পরের দিন মানুষের দোল। এটাই মেনে আসছেন এখানকার মানুষ।

আরও পড়ুন ::

Back to top button