কার্যত সিনেমার কায়দায় খুন হয়েছেন বিজেপি নেতা তথা কয়লা ব্যবসায়ী বলে পরিচিত রাজু ঝা (Raju Jha)। শক্তিগড়ে (Shaktigarh) যাওয়ার সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলেই খবর। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য ২০২১ সালে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন নিহত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা।
বিজেপিতে (BJP) যোগ দিলেও নিহত রাজু ঝার উত্থান বেশ চমকপ্রদ। প্রথম জীবনে কয়লা বহনকারী ট্রাকের খালাসি হলেও বাম জমানা থেকেই কয়লা মাফিয়া হিসেবে ধীরে ধীরে পরিচিতি লাভ করেন নিহত রাজু। অন্ডাল থেকে ডানকুনি পর্যন্ত তার কয়লা ব্যবসার অবৈধ কারবারের রশিদ চলত বলেই খবর পুলিশ সূত্রে। ২০১১ সালের আগে , খনি অঞ্চলে প্রায় দেড় দশক ধরে অবৈধ কয়লার কারবারে রাজুর নাম ছিল প্রথম সারিতে।
বেআইনি কয়লা কারবারে যুক্ত থাকার একটি মামলায় ২০০৬ সালে কয়েক দিন জেল খাটেন। কয়লা সংক্রান্ত নানা অভিযোগে ২০১১ সালের ৩ জুলাই রাজুকে পুলিশ রানিগঞ্জ (Raniganj) থেকে গ্রেফতার করে। ২০০৬ এর পর থেকে তিনি ধীরে ধীরে দুর্গাপুরে বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন। সিটি সেন্টারে ব-কলমে তাঁর রেস্তরাঁ , পার্কিং প্লাজা , শাড়ির দোকান , হোটেল রয়েছে। বীরভূমের বিভিন্ন থানাতে অভিযোগ রয়েছে।
২০২১ সালে আদালতে আত্মসমর্পনের পরেই গ্রেফতার করা হয় বিজেপি নেতা রাজু ঝাকে। দুর্গাপুরের বাসিন্দা কয়লা ব্যবসায়ী রাজেশ ঝা ওরফে রাজু ২০২১ সালে বাঁকুড়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। যেখানে আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এরপরেই বাঁকুড়া সংশোধনাগারে (Bankura Jail) পাঠানো হয় এই কয়লা ব্যবসায়ীকে।
মূলত বাম আমল থেকেই দুর্গাপুর – আসানসোল খনি অঞ্চলে কয়লা ব্যবসায় হাত পাকানো রাজু ঝা তৃণমূলের আমলে এসে একাধিক কয়লা খনির মালিক হয়ে বসে। পরে সুযোগ বুঝে গেরুয়া শিবিরে যোগ। ২০২০ সালের ২১ শে ডিসেম্বর বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও জনমানসে জোর চর্চা ছিল।
অবশেষে বাঁকুড়ায় অ্যাডিশনাল সেশন জজের (সেকেন্ড কোর্ট) কাছে আত্মসমর্পণ করেন রাজু ঝা। সরকারি আইনজীবী অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০৫ সালে, রাজু ঝাঁর বিরুদ্ধে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানায় কয়লা চুরির একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলায় রাজু ঝা নামে অন্য এক ব্যক্তি আদালতে হাজিরা দেন বলে অভিযোগ। সেই জাল হাজিরা আদালত ধরে ফেলে এবং এরপরেই আদালত রাজু ঝা’র বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তারপরেও বেশ কয়েক বার থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তিনি আসেননি।