বর্ধমান

রোজা পালনের মধ্যেই মানসিক ভারসাম্যহীন অসুস্থ ভবঘুরে যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন মুসলিম ভাইয়েরা

রোজা পালনের মধ্যেই মানসিক ভারসাম্যহীন অসুস্থ ভবঘুরে যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন মুসলিম ভাইয়েরা

রোজা পালনের মধ্যেই মানসিক ভারসাম্যহীন অসুস্থ ভবঘুরে যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের ৩ মুসলিম ব্যক্তি । বছর পঁচিশের ওই ভবঘুরের ডানহাতটা কোনোভাবে ভেঙে গিয়েছিল । প্রচন্ড ব্যথায় কাতরাচ্ছিল অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবক । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার মুরাতিপুর গ্রাম তাকে অসহায় অবস্থায় ঘুরে বেড়াতে দেখে তার চিকিৎসার জন্য উদ্যোগী হন মুরাতিপুরের বাসিন্দা আমির শেখ, নাজিরুদ্দিন মল্লিক ও মুক্তারুল হক নামে ওই তিন ব্যক্তি ।

তাঁরাই নিজেদের খরচে অসুস্থ ভবঘুরেকে প্রথমে ভাতার ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু যুবকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বর্ধমানে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা । শেষে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অসুস্থ যুবকের নিখরচায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন মুরাতিপুরের তিন মুসলিম ব্যক্তি ।

মুরাতিপুরের বাসিন্দা পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমির শেখ পশুপাখি প্রেমী ও সমাজসেবী বলে এলাকায় পরিচিত । মুক্তারুল হক ভাতারের নিত্যানন্দপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি এবং নাজিরুদ্দিন মল্লিক নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের সদস্য । শেখ আমির জানান বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে মুরাতিপুর গ্রামের সাহাপাড়ায় রাস্তায় ধারে ওই ভবঘুরেকে পড়ে কাতরাতে দেখা যায়। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা তাকে বিষয়টি জানান ।

শেখ আমির বলেন, ‘দূর্ঘটনায় যুবকটির ডানহাতটা ভেঙে গিয়েছে । ফলে সংক্রমণ থেকে অনেকটা ফুলে গিয়েছে। এছাড়া কিছু জায়গায় ক্ষত রয়েছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। কিন্তু যুবকটি কোনও কথাই বলতে পারছে না। কোথা থেকে কিভাবে এলাকায় এল জানতে পারিনি। যুবকটির অতি দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। নাহলে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা ছিল ।’

জানা যায়, শেখ আমির বৃহস্পতিবার রাতেই স্থানীয় এক চিকিৎসককে ডেকে প্রাথমিক চিকিৎসা করার। তারপর বিষয়টি জানান তার পরিচিত মুক্তারুল হক এবং নাজিরুদ্দিন মল্লিককে । তারপর ওই তিনজন নিজেদের খরচে গাড়ি ভাড়া করে যুবককে উদ্ধার করে ভাতার হাসপাতালে আনেন । ভাতার থানার পুলিশেরও নজরে আনেন বিষয়টা ।

পঞ্চায়েতের সদস্য নাজিরুদ্দিন মল্লিক বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে হয় কোনও দুর্ঘটনা থেকে ওই যুবকের হাতটি এমন মারাত্মকভাবে ভেঙেছে। ওর চিকিৎসার প্রয়োজন। পুলিশকে জানিয়ে আমরা যুবকটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি ।’

জানা যায় নাজিরুদ্দিন , মুক্তারুল হক এবং শেখ আমির তিনজনেই রোজা রেখেছেন । এদিন দুপুরের দিকে ভাতার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে গাড়িতে চাপিয়ে তাকে বর্ধমানে নিয়ে যান। রাস্তার মধ্যেই একটি মসজিদে গিয়ে জুম্মার নামাজ সেরে নেন তিনজন। তারপর ওই জখম যুবককে বর্ধমানের নবাবহাটে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডঃ এস আর ব্যানার্জি বলেছেন,’শীঘ্রই জখম যুবকের হাতে অস্ত্রপচার করা হবে এবং আমরা নিখরচাতেই অসুস্থ যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো ।’

আরও পড়ুন ::

Back to top button