বর্ধমান

তীব্র গরমে কার্যত নাজেহাল বর্ধমান চিড়িয়াখানার জীবজন্তুরা

তীব্র গরমে কার্যত নাজেহাল বর্ধমান চিড়িয়াখানার জীবজন্তুরা

বর্ধমানের নাম শুনলেই সীতাভোগ, মিহিদানার পর মাথায় আসে রমনাবাগানের নাম।বর্ধমানের রাজারা রমনা ডাকাতকে ধরার জন্য সব দিক ঘিরে এগোতে থাকলে সে এলাকা ছেড়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে যায়। রাজ পরিবারের দখলে আসে গোটা এলাকা। তখন থেকেই এলাকাটি রমনাবাগান নামে পরিচিত।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের বিপরীতেই রমনাবাগান অভয়ারণ্য৷ ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বরে এই বনাঞ্চল অভয়ারণ্যের স্বীকৃতি পায়৷ এই অভয়ারণ্য বর্তমানে মিনি জু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এখানে বিভিন্ন ভাল্লুক,বাঘ,কুমির ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়।

গোটা বাংলা তীব্র গরমে কার্যত ফুটছে।এই তীব্র গরমে মানুষ যেমন নাজেহাল তেমনি নাজেহাল পশুপাখিরাও।তীব্র দাবদাহে নাজেহাল বর্ধমান রমনাবাগান অভয়ারণ্যের জীবজন্তুরাও। তাদের সুস্থ রাখতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত পানীয় জল। সেই সঙ্গে থাকছে ফ্রুট জুস এবং ওআরএস। চিতাবাঘ, ভালুককে ভাল করে স্নান করানো হচ্ছে। রয়েছে বড় ফ্যানের ব্যবস্থাও।সুস্থ রাখতে পাম্প চালিয়ে জল ভরা হচ্ছে জলাশয়ে। সেইসঙ্গে চিকিত্‍সকরা নিয়মিত তাদের দেখভাল করছেন।

চলতি গ্রীষ্মের তাপমাত্রা প্রতিদিন মাত্রা ছাড়াচ্ছে। বেলা বাড়তেই গরম হওয়া বইছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দাবদাহ আরও বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বন্য প্রাণীদের উপর বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে বর্ধমান রমনাবাগান অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষ। বর্ধমান জেলা বন দফতরের অধীনে রয়েছে রমনাবাগান জুওলজিক্যাল পার্ক। এখানে চিতাবাঘ থেকে ভালুক, হরিণ, কুমির, ময়ূর ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পাখি রয়েছে।

এই সমস্ত প্রাণীদের গরমের প্রকোপ থেকে স্বস্তি দিতে ইতিমধ্যেই বনকর্মীরা সকাল থেকেই ব্যস্ত থাকছেন। জেলা বিভাগীয় অতিরিক্ত বনাধিকারিক সোমনাথ চৌধরী বলেন, ‘ এখন পানীয় জলের সঙ্গে গ্লুকন-ডি এবং ওআরএস দেওয়া হচ্ছে সমস্ত পশু পাখিদের। শরীরকে ঠান্ডা করতে সকাল সকাল চিতা বাঘের এনক্লোজারের বাইরে থেকে পাইপে করে জল দিয়ে স্নান করানো হচ্ছে ওদের।

পশু পাখিদের ছাউনির খড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে, যাতে রোদের প্রখর তাপে তারা কষ্ট না পায়। এনক্লোজারের ভিতরে জল ছিটিয়ে ভিজিয়ে রাখা হচ্ছে। অভয়ারণ্যের ভিতরে পুকুরগুলোয় এই গরমে জল শুকিয়ে যাচ্ছে।তাই মোটর চালিয়ে পর্যাপ্ত জল ভরে দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। যাতে কুমিরদের কোনও সমস্যা না হয়।

ভালুকের খাঁচায় বড় ফ্যান চালিয়ে ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিকিত্‍সকের পরামর্শে ভালুকের প্রধান খাদ্য মধুর পরিমাণ কমিয়ে তরমুজ বেশি খাওয়ানো হচ্ছে। অন্যান্য পশুদের জন্যও খাদ্যতালিকায় ফলমূলের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। সর্বক্ষণ সমস্ত পশু পাখিদের ওপর নজর রেখে চলেছেন বনকর্মীরা। এখনও পর্যন্ত রমনাবাগান জু – এ সমস্ত বন্যপ্রাণী সুস্থ রয়েছে। গরমের উত্তাপ না কমা পর্যন্ত আগামী কিছুদিন তীক্ষ্ণ নজরদারি রাখা হবে পশুদের ওপর।

আরও পড়ুন ::

Back to top button