ইংলিশ চ্যানেল পেরোলেন সুন্দরবনের রবীন, বার্তা দিলেন ম্যানগ্রোভ রক্ষার

জেদ, নিষ্ঠা, ইচ্ছাশক্তি এবং দুর্দান্ত শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্যকে সঙ্গে নিয়ে ইংলিশ চ্যানেলের কঠিন ও বিপজ্জনক জলপথ অতিক্রম করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের তালদি গ্রামের বাসিন্দা রবীন বলদে। ১১ ঘণ্টা ধরে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায়, বিশাল ঢেউ ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে দিয়ে সাঁতরে এই দুর্লভ কীর্তি অর্জন করলেন তিনি। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মাঝে অবস্থিত এই চ্যানেল বিশ্বজুড়ে সাঁতারুদের জন্য এক ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত। তবে শুধু কঠিন পথ অতিক্রম করাই নয়, রবীন বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছেন সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষার বার্তা।

ভোর থেকে শুরু করে একটানা সাঁতার কেটে রবীন পার করেন প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরত্ব। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ইংলিশ চ্যানেল জয় মানে শুধুই শারীরিক দক্ষতা নয়, এটি একজনের মানসিক স্থৈর্য, আত্মবিশ্বাস ও সহনশীলতার বাস্তব প্রমাণ। রবীনের এই অসামান্য সাফল্যের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থা, প্রশাসনের কর্তারা ও নামী খেলোয়াড়রা। রবীনের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও আনন্দে উদ্বেল। সাঁতারের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষার বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।

এই অসাধ্য কাজ সম্পন্ন করার পর রবীন বললেন, ‘‘ইংলিশ চ্যানেল জয়ের স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। বহুদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। শুধু নিজের জন্য নয়, বাংলার জন্য, দেশের জন্য লড়েছি। এই সাফল্য সমগ্র দেশবাসীকে উৎসর্গ করতে চাই। কারণ মানুষের ভালোবাসা না থাকলে এমন সাফল্য কখনওই সম্ভব নয়।’’

রবীনের এই অর্জন অনেক প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড়ের কাছে হয়ে উঠেছে এক বড় উদাহরণ। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের মতো পিছিয়ে থাকা এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রীড়াবিদ উঠে আসা আজও বিরল ঘটনা। সেই প্রেক্ষিতে রবীনের এই কীর্তি অনুপ্রেরণায় ভরিয়ে দিয়েছে বহু মানুষকে। ভবিষ্যতে আরও বড় আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।