ঝাড়গ্রাম

নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে শিক্ষকের অভিনব ভাবনার বাস্তবায়ন জঙ্গলমহলের স্কুলে

স্বপ্নীল মজুমদার

নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে শিক্ষকের অভিনব ভাবনার বাস্তবায়ন জঙ্গলমহলের স্কুলে - West Bengal News 24
নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রাম: স্কুলে ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়ার সময়ে অভিভাবকদের থেকে লিখিত মুচলেকা আদায় করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়া কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণীতে মেয়েদের ভর্তির সময়ে এবার অভিভাবকদের মুচলেকা দিতে হয়েছে এই মর্মে, ‘১৮ বছরের আগে আমার কন্যার বিবাহ দেবোনা এবং মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ প্রদান করব।’

নাবালিকা বিয়ে বন্ধের এক অভিনব প্রয়াস নিয়েছে জঙ্গলমহলের এই স্কুল। এই ভাবনাটি সম্পূর্ণ ভাবে স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক সুব্রত মহাপাত্রের। ২০১৭ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে মেয়েদের ভর্তির সময়ও একই ধরনের অঙ্গীকার পত্র অভিভাবকদের দিতে হয়েছিল। সেটাও ছিল সুব্রতবাবুর ভাবনা প্রসূত। ঝাড়গ্রাম জেলার মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম এই ধরনের অঙ্গীকারপত্র চালু করে ছিলেন যা প্রশাসনিক স্তরে সর্বত্র প্রশংসা পেয়েছে।

সুব্রতবাবু এর আগে তিনজন নাবালিকার বিবাহ ঠেকিয়ে পুনরায় তাদের স্কুলের আঙিনায় নিয়ে এসেছিলেন পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তায়। স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে তৈরি করেছেন ‘কন্যাশ্রী ব্রিগেড’। কোথাযও নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ ও সচেতনতার কাজ করে স্কুলের কন্যাশ্রীরাই।

আরও পড়ুন: বেলডাঙায় নৌকাডুবিতে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য মুখ্যমন্ত্রীর

এরপর পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় বিয়ে ঠেকিয়ে মেয়েটিকে স্কুলে ফেরানো হয়। এবার একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সময়েও নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে মুচলেকা চালু করা হয়েছে বেলিয়াবেড়ার এই স্কুলটিতে। বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি বিপদভঞ্জন দে বলেন, “সুব্রতবাবুর ভাবনা প্রসূত এই প্রয়াসকে আমরা সমর্থন করি।

নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে শিক্ষকের অভিনব ভাবনার বাস্তবায়ন জঙ্গলমহলের স্কুলে - West Bengal News 24
নিজস্ব চিত্র

অনেক অভিভাবক আছেন যাঁরা ১৮ বছরের আগেই মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেন। সুব্রতবাবুর এই প্রয়াস একটু হলেও অভিভাবকদের ভাবাচ্ছে।”একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীর অভিভাবক বকুল খামরি বলেন, ” সুব্রতবাবুকে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চিনি, একই স্কুলে আছেন, তিনি পড়ানোর ফাঁকে নানান সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাঁর এই প্রচেষ্টাকে আমরা সন্মান জানাই।”

গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, “সুব্রতবাবুর এই প্রয়াস নাবালিকা বিয়ে বন্ধের ক্ষেত্রে অনেকখানি সহায়ক হচ্ছে। অন্যান্য স্কুলগুলি যদি এই ধরনের উদ্যোগ নেয় তাহলে নাবালিকা বিয়ে আটকানোর কাজে অনেকখানি সাফল্য পাওয়া যাবে।” বেলিয়াবেড়া চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক তমাল দাসের কথায় “সুব্রতবাবুর ভাবনায় স্কুলের এই প্রয়াস দৃষ্টান্তমূলক ও প্রশংসনীয়।”

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য