পশ্চিম মেদিনীপুর

নিজেদের বিয়ে রুখে সচেতনতার নতুন মুখ মেদিনীপুরের তিন কন্যাশ্রী, সংবর্ধণা দিলেন জেলাশাসক

নিজেদের বিয়ে রুখে সচেতনতার নতুন মুখ মেদিনীপুরের তিন কন্যাশ্রী, সংবর্ধণা দিলেন জেলাশাসক

নিজেদের বিয়ে আটকে এখন জেলার নতুন মুখ তিন নাবালিকা। কারণ, তারা শুধু নিজের চেষ্টায় নিজের বিয়ে আটকেছে তা নয়, সমাজের কাছে যে সচেতনার বার্তাও দিতে সক্ষম হয়েছে।

আর তাই সেই তিন ‘কন্যাশ্রী’কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জেলাশাসক। নিজের কার্যালয়ে তিন কন্যাকে উত্‍সাহিত করতে তুলে দিলেন উপহারও। এমনই ঘট‌না ঘটলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়।

সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় নিজেদের বিয়ে আটকে সচেতনতার বার্তা দিয়েছিল তিন ছাত্রী। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক খুরশীদ আলি কাদরি তাঁদের সাথে কথা বলে উত্‍সাহিত করার পাশাপাশি একটি করে ডিকশনারি, স্কুল ব্যাগ ও পড়াশোনার সরঞ্জাম তুলে দেন। সেই সাথে তাঁদের সঙ্গে বসে নিজেই টিফিন করলেন এক অতিরিক্ত জেলা শাসকও।

জেলা শাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর এর স্বপ্ন ছিল নারী শিক্ষা ও নাবালিকা বিয়ে রোধ। সেই জেলায় নাবালিকা বিয়ে আটকাতে প্রশাসন সদা তত্‍পর। তবে সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও। স্কুলের নাবালিকা পড়ুয়ারা তাদের বিয়ে আটকাতে এগিয়ে আসছে নিজেরাই। বিয়ের পরিবর্তে পড়াশোনা করতে চেয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে ছুটে যাচ্ছে নাবালিকারা। এটা কম পাওনা নয়। জেলায় একবছরে টিনেজার প্রসূতির সংখ্যা ২০ শতাংশ। এই সংখ্যা একবারেই শূন্য করতে হবে। এজন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। জেলায় চলতি বছরের প্রথম তিনমাসে পকসো কেসের সংখ্যা ৯৫। এই সব সমস্যা আটকাতে স্কুলে স্কুলে ক্যাম্প করা হবে। কাউন্সিলিং করা হবে।

এদিন ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা এবং মেদিনীপুর সদর ব্লকের মোট তিনটি স্কুল থেকে এসেছিল তিন পড়ুয়া। চলতি মাসেই চন্দ্রকোনায় বিডিওর দ্বারস্থ হয়ে নিজের বিয়ে আটকে ছিল এক নাবালিকা। সে চায় আইপিএস হতে। অন্যদিকে চন্দ্রকোনার দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী নিজের বিয়ে আটকেছিল স্কুলে শিক্ষকদের সহয়তায়। মেদিনীপুর সদর ব্লকের মৌপাল এলাকার একটি স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রীরও বিয়ে আটকায় স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা। তারা চায় পুলিশ হতে।

তিনজনেই বলে, আমরা এখন বিয়ে করতে চায় না। পড়াশুনা করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চায়। আমরা এখন কন্যাশ্রী। তাই পড়াশুনা করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এমন কি এটাও জানাতে ভোলেনি যে, নির্দিষ্ট বিয়ে বয়স ছাড়া বিয়ে করা উচিত নয়। যাদের পরিবার অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইছেন তাদের এই বিষয়ে বোঝানো উচিত্‍। তাই জেলাশাসকও দ্রুত তাদের সংবর্ধণা জানাতে ভোলেননি। প্রশাসনিক কর্তাদের অভিমত, এই ধরণের ঘটনা সমাজে নাবালিকা বিয়ে রুখতে সকলকেই উত্‍সাহিত করবে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button