আপনি কি AI ENGINEER হতে চান? AI ENGINEER এর বেতন শুনলে চমকে যাবেন আপনি
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ (Artificial Intelligence), ছোট করে ‘এআই’ (AI), বর্তমানে একে নিয়েই চলছে চর্চা। বহু মানুষ ভয় পাচ্ছেন, এআই আসার ফলে তাঁদের চাকরি চলে যাবে। কারণ, স্পিচ রেকগনিশন থেকে ইমেজ প্রসেসিং, ডিজনেস ম্যানেজমেন্ট, এমনকি রোগ নির্ণয় – আপাতদৃষ্টিতে মানুষের কাজ আরও উন্নত করার এবং সহজ করার ক্ষেত্রে সীমাহীন সম্ভাবনা রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার।
তবে এই বাজারে যাদের চাহিদা সবথেকে বেড়েছে, তারা হল এআই ইঞ্জিনিয়ার (AI Engineer)। এআই ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলে কিন্তু, আগামী বেশ কয়েক দশকের জন্য আপনার কেরিয়ার থাকবে তুঙ্গে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এআই ইঞ্জিনিয়াররা কী করে , কীভাবে এই দিকে কেরিয়ার গড়া যায় (How to become an AI Engineer) ?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই হল একটি কম্পিউটার সিস্টেম, যা মানুষের আচার-আচরণ অনুকরণ করতে পারে। মানুষ এবং প্রাণীদের প্রাকৃতিক বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তুলনীয় হয় এই কম্পিউটার সিস্টেমের বুদ্ধিমত্তা। অতীতের তথ্য এবং কর্মকাণ্ড থেকে তারা ভাল-খারাপ বিভেদ করতে শেখে। যার ফলে, তারা নিজেরাই নিজেদের সংশোধন করতে পারে। সেই সঙ্গে নতুন ইনপুটগুলি প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারে। বলা যেতে পারে, এর ফলে কোনও যন্ত্র প্রায় মানুষের মতো কাজ করতে পারে।
সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং, সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স এবং মানব-কেন্দ্রিক নকশার নীতির উপর ভিত্তি করে একজন এআই ইঞ্জিনিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সিস্টেম তৈরি করেন। যা মানুষের প্রয়োজন মেটায়। মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম এবং ডিপ লার্নিং-এর নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তিনি এআই মডেল তৈরি করেন। লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে সিস্টেমের শক্তি। মূলত, এআই সিস্টেমগুলির বিকাশ এবং দেখভাল করাই এআই ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ।
এআই ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হবে –
এআই ইঞ্জিনিয়ার ক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য প্রথম প্রয়োজন হল হাইস্কুল স্তরে রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, গণিত-সহ সায়েন্স নিয়ে পড়া। স্ট্যাটিসটিক্স থাকলেও হবে। আপনি যদি সায়েন্স নিয়ে ভাল রেজাল্ট-সহ স্কুল ছাড়েন তাহলে এআই ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কেরিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে আপনার শিক্ষার ভিত অত্ন্ত মজবুত হবে।
২. চার বছরের ব্যাচেলর অব টেকনোলজি বা বিটেক (B.Tech.) ডিগ্রির বদলে তথ্য প্রযুক্তি বা কম্পিউটার বিজ্ঞানের মতো বিষয়ে ব্যাচেলর অব সায়েন্স বা বিএসসি (B.Sc.) ডিগ্রি অর্জন করেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশেষজ্ঞ হওয়া সম্ভব। তবে আলাদা করে শিখতে হবে ডেটা সায়েন্স এবং মেশিন লার্নিং। এর পরে এআই ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করতে হবে।
এছাড়া, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কোর্স বা ডিপ্লোমা প্রোগ্রামগুলির মাধ্যমেও কম খরচে এআই বিশেষজ্ঞ হিসেবে কেরিয়ার গড়া যায়। এআই এবং মেশিন লার্নিং-এ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের সুযোগও রয়েছে।
একজন এআই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য, ডিগ্রির পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তব-পৃথিবীর সমস্যাগুলির সঙ্গে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা থাকা ডিগ্রির সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন প্রকল্পে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবং হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে, আপনি ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াতে পারেন, দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে পারেন।
এআই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তির অভিজ্ঞতাও লাগবে। উপরন্তু, অনলাইন কোর্স এবং বুটক্যাম্পগুলি আপনাকে বাস্তব-পৃথিবীর প্রকল্পগুলিতে কাজ করার এবং এই ক্ষেত্রের পেশাদারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ দেয়। তাত্ত্বিক জ্ঞান এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণেই একজন দক্ষ এআই ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়।
এআই ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন নির্ভর করে তার অভিজ্ঞতার উপর। ভারতে ২ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এআই ইঞ্জিনিয়াররা বছরে ৮ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন। অভিজ্ঞতার বয়স ৫ থেকে ১০ বছর হলে বেতন বেড়ে হয় বার্ষিক ১৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। আর ১০ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এআই ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন বছরে ৩০ লক্ষ টাকার বেশি হয়।