Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
সাহিত্য

রাঁচিতে পালিত হল বিশ্ব মস্তিষ্ক দিবস

রাঁচিতে পালিত হল বিশ্ব মস্তিষ্ক দিবস

২২ জুলাই বিশ্ব মস্তিষ্ক দিবস উপলক্ষে রাঁচির সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি (CIP) এবং কলকাতার কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র যৌথ ভাবে আয়োজন করে একটি ভিন্নধারার অনুষ্ঠান। ২০২৩ সালে থিম হিসেবে উল্লেখ করা হয় – ‘ব্রেন হেল্থ এ্যান্ড ডিসাবিলিটি: লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড’।

অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় CIP-এর R.B.Davis অডিটোরিয়ামে এবং S.S. Hall – এ। CIP-এর পক্ষ থেকে ডিরেক্টর ডাঃ বাসুদেব দাস (সাইকায়াট্রি), অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য্য (প্রধান,সাইকায়াট্রি সোশাল ওয়ার্ক) এবং ডাঃ অবিনাশ শর্মা (অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার-ইন-চার্জ) এই অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র – এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন CIP – এর পক্ষ থেকে সামাজিক মনোচিকিৎসা বিশেষজ্ঞ পুজা আঢ্য।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডাঃ এইচ.পি.নারায়ণ (প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব নিউরোসার্জারি, আর.আই.এম.এস, রাঁচি) এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ অনিল কুমার (সিনিয়র কনসালটেন্ট সাইকায়াট্রিস্ট, রাঁচি)।
এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য প্রফেসর দীপক ঘোষের (প্রতিষ্ঠাতা এবং ইমেরিটাস প্রফেসর, সি.ভি. রমন সেন্টার ফর ফিজিক্স এ্যান্ড মিউজিক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) পূর্ব ধারণকৃত বক্তৃতা ঐ দিন শোনানো হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন, তাঁর আলোচনার বিষয় ছিল ‘মিউজিক্যাল ইন্টারভেনশন অন মেন্টাল ওয়েল-বিইং – আ সায়েন্টিফিক এক্সপ্ল্যানেশন’ অর্থাৎ অত্যাধুনিক বিজ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে মানব মনের সুস্থতায় সঙ্গীত।

এই বিশেষ দিনে ‘মানসিক স্বাস্থ্যে ভারতীয় মার্গ সঙ্গীতের ভূমিকা’ সম্পর্কে আলোচনা করেন প্রফেসর শৌভিক চক্রবর্তী (গণিত বিভাগ, বিড়লা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি,মেসরা, রাঁচি)।

আলোচনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শুরু হয় CIP – এর মানসিক রোগীদের সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। সোমঋতা মল্লিকের তত্ত্বাবধানে তাঁরা প্রথমে হিন্দীতে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত এবং পরে ‘গণেশ-বন্দনা’ পরিবেশন করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলামের প্রার্থনামূলক সঙ্গীত এবং কবিতা পরিবেশন করেন কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্রের শিল্পীবৃন্দ। এই বছর যন্ত্র সঙ্গীতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সরোদে নট-ভৈরব বাজিয়ে শোনান শ্রী মনিত পাল, তবলায় যোগ্য সঙ্গত করেন শ্রী বোধিমন দাশগুপ্ত।

বিভিন্ন ভাষা-ভাষীর মানুষেরা এই অনুষ্ঠান খুবই উপভোগ করেন।

কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র – এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক বলেন,”সুস্থাবস্থায় কবি নজরুল বেশ কয়েকবার রাঁচিতে সপরিবারে গিয়েছিলেন, তার প্রমাণ স্বরূপ পাওয়া যায় বেশ কিছু আলোকচিত্র। ১. রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাতের পাদদেশে দুই পুত্র-কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধর সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামের ছবিটি বিশেষভাবে জনপ্রিয়। ২. রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাতে পুত্র বুলবুলকে কোলে নিয়ে প্রমীলা দেবী। ৩. রাঁচিতে বাড়ির সামনে নজরুলের ক্রাইসলার গাড়ি। গাড়ির খুদে আরেহীদের মধ্যে রয়েছে দুই পুত্র অনিরুদ্ধ-সব্যসাচী। দূরে চায়ের পেয়ালা হাতে নজরুল এই দৃশ্য উপভোগ করছেন। (তথ্যসূত্র: কল্যানী কাজী সম্পাদিত ‘Nazrul, The Poet Remembered’)। এই আলোকচিত্রগুলি দিয়ে তৈরী একটি কোলাজ আমরা তুলে দিলাম CIP – এর ডিরেক্টর শ্রী বাসুদেব দাসের হাতে। ২৫ জুলাই, ১৯৫২ সালে নজরুলকে চিকিৎসার জন্য রাঁচির মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সঙ্গে ছিলেন প্রমীলা নজরুল। রাঁচিতে নজরুলকে চিকিৎসারত অবস্থায় দেখেছেন এরকম মানুষেরাও আজ জীবনের শেষ লগ্নে উপস্থিত। এখনও তাঁদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে নজরুলের সেই নির্বাক, ভাবলেশহীন মুখখানি। নজরুল স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানে বারংবার আসতে পেরে আমরা ধন্য। ভবিষ্যতে বেশ কিছু কাজ আমরা CIP – এর সঙ্গে মিলিতভাবে করতে চাই।”

আরও পড়ুন ::

Back to top button