জীবন যাত্রা

বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর পাঁচ পরীক্ষা আবশ্যিক

বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর পাঁচ পরীক্ষা আবশ্যিক

বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর ঠিকুর্জি কুষ্টি মেলানো প্রবণতা অনেকেরই থাকে ৷ কিন্তু বিয়ের পরে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয় তারজন্য মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো উচিত। আগের প্রজন্ম এর প্রয়োজনীয়তা না বুঝলেও, আধুনিক ছেলেমেয়েরা এই বিষয়ে কিছুটা সচেতন৷ কিন্তু অনেক সময় নিজের বিয়ের ব্যাপারে লজ্জায় এই সব পরীক্ষার কথা তারা বাবা-মাকে বলতে পারে না৷ আর তারফলে বিয়ের পর নানা রকম সমস্যায় পড়লে আপশোস করতে দেখা যায় ৷ পাত্র/পাত্রীর বাড়ির লোকেরও এই বিষয়ে বিশেষত সচেতন হওয়া একান্ত জরুরি ৷

এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক বিয়ের আগে কী কী মেডিক্যাল টেস্ট করানো আবশ্যিক৷

প্রথমত: দেখা দরকার পাত্র বা পাত্রীর কোনও রকম যৌনসংক্রমণ আছে কি না৷ এযুগের ছেলেমেয়েরা সেক্সের ব্যাপারে অনেকটাই এগিয়ে ফলে বিয়ের আগেই অনেক রকম শারীরিক সম্পর্কের অভিজ্ঞতা হয় তাদের। বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে লিপ্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে । ফলে কার শরীরে কোনও সংক্রমণ আছে কি না সেটা জেনে নেওয়া জরুরি এতে লজ্জার কিছু নেই৷ পাত্র/পাত্রী HIV, গনোরিয়া, সিফিলিসের মতো যৌনরোগে আক্রান্ত কি না বলা কঠিন। তাছাড়া, কেউ এই নিয়ে মুখ খোলে না। একমাত্র মেডিক্যাল টেস্ট করালেই গোপন সংক্রমণ ধরা পড়তে পারে।

দ্বিতীয়ত: শুক্রাণু পরীক্ষা৷ বিয়ের পর সাধারণত সব দম্পতিই সন্তান নিতে চান। কিন্তু অনেক সময় সন্তান ধারণে অসুবিধার থেকে যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। এর কারণ হতে পারে স্বামী-স্ত্রী দু-জনেই। স্ত্রীর শরীর অনেক সময় সন্তান ধারণের উপযুক্ত পরিস্থিতিতে থাকে না বলে সন্তান আসে না। কিন্তু সেটা আগে থেকে জানা যায় না। তবে পুরুষের অক্ষমতা কিন্তু মালুম হয় শুক্রাণু পরীক্ষা করালেই।

তৃতীয়ত: ব্লাড গ্রুপ৷ পাত্র বা পাত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা একান্ত জরুরি। কারণ নেগেটিভ ও পজ়িটিভ ব্লাড গ্রুপের নারীপুরুষের বিয়ে হলে পরবর্তীকালে সন্তান ধারণে বিপত্তি দেখা যায়৷ তবে এই সমস্যাটি মূলত দেখা দেয় দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে। অনেক সময় গর্ভেই সন্তান মারা যায়। কিংবা জন্মের পর সন্তান মারাত্মকরকম জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারে। মস্তিষ্কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদিও আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থায় এটি রোধ করার পদ্ধতি আছে। সন্তান জন্মানোর সময় মায়ের শরীরে অ্যান্টিবডি ইঞ্জেকশন দিলে ক্ষতির সম্ভাবনা কমতে পারে।

চতুর্থত: মানসিকরোগ পরীক্ষা৷ এই বিষয়টা বেশির ভাগ পরিবারই ধর্তব্যের মধ্যে আনতে চান৷ মানসিক সমস্যা থাকা মানে পাগল এমন ভাবা উচিত হবে না৷ সত্যি বলতে কী, কোনও ব্যক্তিকে বিয়ে করার আগে সে স্বাভাবিক কি না জানা খুব দরকার। অর্থাৎ, দেখা দরকার তার কোনও মানসিক সমস্যা আছে কি না। এটি খতিয়ে দেখার জন্য পাত্র/পাত্রীর আচার ব্যবহার লক্ষ্য করতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও অফিসের লোকজনের থেকে খোঁজখবর নিতে হবে। এক্ষেত্রে সাইকোলজিস্টের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন।

পঞ্চমত: দেখা দরকার পাত্র-পাত্রীর ওরিয়েন্টেশন৷ অনেক সময় ছেলে বা মেয়ের এই বিষয়টা চেপে যায় বাড়ির লোক। ছেলে বা মেয়ে সমকামী হলে, পাছে সমাজের কটাক্ষ করে সেই ভয়ে পরিবারের লোক এই সমস্ত সত্য গোপন করে, স্বাভাবিক মতে তাদের বিয়ে দেয় । এতে হিতে বিপরীত হয়৷ যে মেয়েটি কিংবা যে ছেলেটির সঙ্গে বিয়ে হয়, প্রথম রাতেই সে সবটা জেনে যায়। তারপরেই শুরু হয়ে যায় অশান্তি। তখন সেটা থেকে পরিবারে বড় রকমের অঘটন ঘটতেও দেখা গিয়েছে৷ সুতরাং এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া বাঞ্জনীয়৷ এ জন্য সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া দরকার৷

আরও পড়ুন ::

Back to top button