জীবন যাত্রা

পাঁচ ভুলের কারণে আপনি ইন্টারভিউতে ডাক পাচ্ছেন না

পাঁচ ভুলের কারণে আপনি ইন্টারভিউতে ডাক পাচ্ছেন না

নতুন চাকরি খোঁজা বেশ ক্লান্তিকর একটি প্রক্রিয়া। তবে সবচেয়ে বেদনাদায়ক হলো ইন্টরাভিউতে বসার সুযোগ পাওয়ার আগেই আবেদনকৃত পদে নিয়োগ হয়ে গেছে বলে জানতে পারা।

আপনি যদি বারবার নিজেকে এমন পরিস্থিতিতে আবিষ্কার করেন তাহলে আপনি হয়তো কীসে আপনাকে পেছনে টেনে ধরছে তা জানতে চাইতে পারেন। যাতে আপনি যত দ্রুত সম্ভব তা সমাধান করতে পারেন। কিন্তু সত্যটি হলো:

কিন্তু সকল সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম এমন কোনো সার্বজনীন সমাধান নেই যা আপনাকে ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। অনেক সময় একটি ক্ষুদ্র গৌণ সমাধানও বিশাল পরিবর্তন সাধন করে।

অনেকসময় আবার আপনাকে আপনার সার্বিক কৌশলও পুনর্গঠন করতে হতে পারে। আর আপনি এই প্রক্রিয়ার ঠিক কোথায় হোঁচটটি খাবেন তাও আগেভাগে অনুমান করা সম্ভব নয়।

পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর থেকে আপনি আপনার চাকরি খোঁজার প্রক্রিয়ার সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারবেন এবং সেসব মোকাবেলার জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রশ্নগুলো পর্যায়ক্রমে পড়ে যান এবং সেগুলোর উত্তর যদি হয় ‘হ্যাঁ’ তাহলে বুঝবেন আপনার চাকরি খোঁজার প্রক্রিয়ায় পরিবর্ত সাধন জরুরি। আর যদি প্রশ্নগুলোর উত্তর হয় ‘না’ তাহলেও মনোযোগ দিয়ে পড়ুন যে আপনার মধ্যে আরো বড় কোনো সমস্যা আছে কিনা যা আপনাকে পেছনে টেনে ধরছে।

১। আপনার চাকরির আবেদন উপকরণগুলোতে কি কোনো জ্বলজ্বলে ত্রুটি আছে?
উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে এর সমাধানে যত্নবান হোন। প্রতিটি আবেদপত্র লেখার পর তাতে ছুরি চালানোর মতো করে পর্যবেক্ষণ করুন। আরো ভালো হয় আবেদনপত্র লেখার পর কোনো বন্ধুকে দিয়ে এতে কোনো ভুল আছে কিনা তা দেখা। বিশেষ করে বানান এবং ব্যকরণগত কোনো ভুল আছে কিনা তা দেখাটা জরুরি।

২। আপনার আবেদন পত্রের কভার লেটারটি সচরাচর সকলের মতোই?
আপনি হয়ত জানেন আপনার জীবনবৃত্তান্ত, কভার লেটার এবং পরিচয়মূলক ইমেইল নিখুঁত। কারণ আপনি সব পদের জন্য একই কভার লেটার ব্যবহার করেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই কৌশল উল্টো গুলি ছুঁড়তে পারে।

মনে রাখবেন, চাকরির বিবরণেই কোনো কম্পানি তাদের আদর্শ প্রার্থীর কাছে ঠিক কী চায় তার রুপরেখা দেওয়া থাকে। সুতরাং তা থেকেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার কভার লেটারে আপনার কোনো শক্তিটার কথা উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি প্রতিটি চাকরির বিবরণ না পড়ে আগের লেখা একই কভার লেটার দেন তাহলে ভুল করবেন।

উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন। কভার লেটারের শুরুতেই একটি শক্তিশালি লাইন লিখুন। ‘এই পদের জন্য আবেদন করতে গিয়ে আমি উত্তেজনা বোধ করছি’ এই জাতীয় অতিকথন না করে বরং পদটিতে আবেদনের ক্ষেত্রে কীসে আপনাকে আগ্রহী করে তুলেছে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে বলুন। অথবা কেন আপনার দক্ষতা আবেদনকৃত পদটিতে আপনাকে অসাধারণ ভুমিকা পালন করতে সহায়তা করবে তা বলুন।

৩। আপনি শুধু আবেদনপত্র পাঠিয়েই চুপচাপ অপেক্ষা করেন?
অনেক লোকেই এটা বুঝতে ব্যর্থ হন শুধু আবেদন করলেই চাকরির ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া যায় না। এমনকি প্রকৃতপক্ষে আবেদনপত্র পাঠানোর পরই ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়ার জন্য বেশিরভাগ কাজ করতে হয়।

আপনি যদি আবেদনপত্র পাঠানোর পর চুপচাপ বসে থাকেন এই ভেবে যে নিয়োগদাতারাই আপনাকে ইন্টারভিউর জন্য ডাকবেন তাহলে আপনি ভুল করছেন।
বরং একটি চাকরিতে আবেদন করার পর সে চাকরির নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইমেইল বা লিঙ্কডইনে যোগাযোগ করুন। নিয়োগকর্তাদের জানান যে আপনি আবেদন করেছেন এবং ইন্টারভিউতে মুখোমুখি হওয়ার একটা সুযোগ চান।

অনেকে হয়তো এমন কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবতে পারেন। কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এতে নিয়োগদাতারা আপনাকে সত্যিই আগ্রহী ভাববেন এবং আপনার জীবনবৃত্তান্ত কারো নজর এড়িয়ে গেলে অন্য কারো না কারো নজরে পড়বে।

৪। আপনি কি আপনার চাকরি খোঁজার বিষয়টি গোপন রেখেছেন?
আপনি হয়তো আপনার বন্ধুদেরকে বিরক্ত করতে চান না। ফলে আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইন্টারভিউতে ডাক না পাওয়া পর্যন্ত আপনি যে কম্পানিতে আবেদন করেছেন সে কম্পানিতে কাজ করা কোনো বন্ধুকে আপনার আবেদনের বিষয়টি বলবেন না।

অথবা আপনি হয়তো বন্ধুকে বিষয়টি বলতে চাইছেন না কারণ আপনি মনে করেন এর জন্য যে যোগ্যতা দরকার তা আপনি দেখাতে পারবেন না।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, কম্পানির ভেতরের কারো সুপারিশে ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়াটা আরো সহজও হতে পারে। সুতরাং আগে ভাগেই আবেদনকৃত কম্পানিতে কোনো বন্ধু থাকলে তাকে বিষয়টি জানালেই ভালো হবে হয়তো।

সুতরাং আবেদন করার পর কম্পানিটির বিষয়ে গবেষণা করুন এবং একটি পদকে টার্গেট করে বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা করুন।

৫। আপনি কি বাস্তবানুগ আচরণ করছেন?
অনেক সময় এমনও হতে পারে উচ্চাকাঙ্খার কারণে আপনি যে পদের জন্য যোগ্য নন সে পদেই আবেদন করে বসলেন। কাজটি একেবারেই খারাপ নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমনটা করা ঠিক না। কারণ এর ফলে আপনি ইন্টারভিউতে ডাক পাবেন না।

এ সমস্যার সমাধানে ৮০-২০ নিয়ম মেনে চলুন। আপনার আবেদনকৃত প্রতি ১০টি পদের দুটিতে যথাযথভাবে আবেদন করুন। বাকী আটটি পদেও অন্তত সবগুলো ন্যূনতমে যোগ্যতা আছে বলেই আবেদন করুন। আর আপনি কেন যোগ্য তার একটি সহজ ও যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিন।
সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার

আরও পড়ুন ::

Back to top button