অপরাধ

পরকীয়া প্রেমের জের ধরে স্বামীর পরিবারের ৬ জনকে খুন!

পরকীয়া প্রেমের জের ধরে স্বামীর পরিবারের ৬ জনকে খুন!

নিজের পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করতে ১৪ বছরে নিজ স্বামীর পরিবারের ছয়জনকে হত্যা করেছে জোলি থমাস নামে এক ভারতীয় নারী। তাকে এসব হত্যাকান্ডে সহায়তা করেছে তার পরকীয়া প্রেমিক শাজি ও তার বন্ধু প্রাজু কুমার।

নির্মম এই হত্যাকান্ডর ঘটনা ঘটেছে কেরালা প্রদেশের কোঝিকোদ জেলার কুদাথাই গ্রামে। এই হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে জলি থমাস, তার পরকীয়া প্রেমিক ও বর্তমান স্বামী শাজি অ তার বন্ধু প্রাজু কুমারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সংবাদমাধ্যম স্ক্রল ইনের এক প্রতিবেদনে এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

২০০২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এই হত্যাকান্ডগুলো সংগঠিত হয়। জলি থমাস তার স্বামীর পরিবারের সদস্যদের বিষ প্রয়োগে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে স্বীকার করেছেন।

পুলিশ জানায়, খাবারে বিষ মিশিয়ে ওই ছয়জনকে হত্যা করা হয়। ২০০২ সালে সেপ্টেম্বরে ওই পরিবারের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আন্নাম্মা প্রথমে খুন হন। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে খুন হন জলি থমাসের স্বামী রয় থমাস ও পরিবারের অপর সদস্য রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা টমস থমাস। এর তিন বছর পর ২০১১ সালের অক্টোবরে খুন হন তাদের ছেলে।

এই ছেলের মৃত্যুর পর তার এক আত্মীয় সন্দেহ পোষণ করেন। পরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিষ প্রয়োগে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ এই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ধরে তদন্ত এগিয়ে নেয়নি।

২০১৪ সালের এপ্রিলে রয়ের মামা এমএম ম্যাথিউ খুন হন। একই বছরের মে মাসে এমএম ম্যাথিউয়ের এক বছর বয়সী মেয়ে আলফাইন হঠাৎ মারা যান। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে খুন হন আলফাইনের মা ও শাজির প্রথম স্ত্রী সিলি। এর এক বছর পর জলি থমাস বিয়ে করেন আলফাইনের বাবা শাজিকে।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত রয় থমাসের ছোট ভাই রোজো এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা করার পর পুলিশ নড়েচড়ে বসে। পরে দীর্ঘ তদন্তের পর এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শাজি ও তার স্ত্রী জলি থমাসকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য রয় থমাস ছাড়া বাকি পাঁচজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, পরকীয়া প্রেমিক শাজি ও তার বন্ধু প্রাজু কুমারের কাছ থেকে বিষ সংগ্রহ করেন জলি থমাস। কোঝিকোদের পুলিশ সুপার কেজি সিমন বলেছেন, আমরা দুটি বিষয় ধরে নিশ্চিত হয়েছি যে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জলি থমাস জড়িত। পরিবারের সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষক হয়েছিলেন বলে মিথ্যা গল্প তৈরি করেছিলেন।

পারিবারিক এই হত্যাকাণ্ডে জলির সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ যথাযথ তথ্য ও ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ করেছে। রাজ্যের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে রয়ের স্ত্রী জলি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, এমন প্রমাণ পাওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য পাঁচ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ব্যাপক পরিসরে তদন্ত চলমান রয়েছে।

সুত্র : বিডি২৪লাইভ

আরও পড়ুন ::

Back to top button