কলকাতা

করোনা আক্রান্ত সদ্যোজাত ২০ দিন ICU-তে কাটিয়ে অবেশেষে সুস্থ

করোনা আক্রান্ত সদ্যোজাত ২০ দিন ICU-তে কাটিয়ে অবেশেষে সুস্থ

চারপাশের দমবন্ধকর আবহাওয়ার মধ্যেই হঠাত্‍ শরীর জুড়নো দমকা হাওয়া! করোনা আতঙ্কের মধ্যেই এক ব্যতিক্রমী খুশির খবর। মৃত্যুকে হেলায় হারিয়ে মাত্র ১৩০০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশু, যার তিন দিনের মাথায় করোনা পজিটিভ হয়, ২০ দিন আইসিইউ-তে অক্সিজেনের সাহায্যে বাঁচার লড়াই চালাচ্ছিল, অপরিসীম জীবনী শক্তিতে ভর করে আর চিকিত্‍সকদের প্রাণপণ চেষ্টায় নতুন জীবনে ফিরল। ৩২ দিনের মাথায় প্রায় ২ কিলো ওজন নিয়ে করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল সে। এই বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা।

দমদমের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কা লোহিয়া (নাম পরিবর্তিত), গর্ভবতী অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হন। ৩১ সপ্তাহের মাথায় সময়ের আগেই বা প্রি-ম্যাচিউর যমজ সন্তানের জন্ম দেন তিনি। জন্মানোর পরে এক সন্তানের মৃত্যু হয় আর আরেক সন্তান তিনদিনের মাথাতেই করোনা আক্রান্ত হয়। তারপর শুরু হয় যমে-মানুষে টানাটানি। তীব্র শ্বাসকষ্ট কোনও কিছু খেতে পারছে না সদ্যোজাত। মায়ের দুধ থেকে শুরু করে কোনও কিছুই তার গলা দিয়ে নামছে না। হার্টবিট স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই কম। এই অবস্থায় তাকে আনন্দপুরে ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

আরও পড়ুন : আলিয়ার প্রেমিক পার্থ!

একদিকে এই শিশুটির অপরিসীম জীবনী শক্তি আর তার সঙ্গে হাসপাতালে চিকিত্‍সকদের হার না মানা চ্যালেঞ্জের মিশেলে এক রূপকথার জন্ম হল। ১৩০০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুটির নাম রাখা হয় ‘গৌরব’। সেই শিশুকে ফর্টিস হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকেই আইসিইউ-তে রাখতে হয়। ৮ দিন বয়সে আবারও করোনা পরীক্ষা করা হলে দেখা যায় আবারও পজিটিভ। এরপর ১৬ দিন বয়সে আবার পরীক্ষা। আবারও করোনা পজিটিভ। শিশুর পরিবার এক প্রকার হাল ছেড়ে দেয়, কিন্তু হাসপাতালে চিকিত্‍সকরা তাঁদের চ্যালেঞ্জে অবিচল। ফুটফুটে শিশুকে তাঁরা সুস্থ করে তুলবেনই।

শিশুর ২০ দিন বয়সে তাকে আইসিইউ থেকে বার করা হয়। এরপরেই ২১ দিনের মাথায় করোনা পরীক্ষা করা হলে এবার রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। ১০ দিন ধরে নিরবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ। নতুন করে কোনও রকম সমস্যা না দেখা দেওয়ায় জন্মের ৩২ দিনের মাথায় শিশুটিকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয় আর তখন তার ওজন ৬০০ গ্রাম বেড়ে গিয়ে ১৯০০ গ্রাম।

ফর্টিস হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍সক সুমিতা সাহা, যিনি প্রথম থেকেই এই শিশুর চিকিত্‍সা করেন, তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ী ভঙ্গিতে বলেন, ‘শিশুটিকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানো আমাদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আর তাতে আমরা সফল। এই দিনটা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলাম। আজ সত্যিই খুব আনন্দ হচ্ছে। আর এত কম ওজনের শিশু যে করোনা আক্রান্ত হয়েছে, তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভবত বিশ্বের প্রথম। এর আগে গ্রেট ব্রিটেনে দেড় কেজি ওজনের এক করোনা আক্রান্ত শিশু সুস্থ হয়। আর এখানে ১৩০০ গ্রাম ওজনের এই শিশুটিকে আমরা সুস্থ করে বাড়ি পাঠালাম।’

 

সুত্র: News18

আরও পড়ুন ::

Back to top button