ঝাড়গ্রাম

প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রমজীবী ক্যান্টিনে স্মরণসভা

স্বপ্নীল মজুমদার

প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রমজীবী ক্যান্টিনে স্মরণসভা

ঝাড়গ্রাম : প্রয়াত সিপিআই নেতা তথা ঝাড়গ্রাম পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান প্রদীপ মৈত্রের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার এক স্মরণসভা হল। ঝাড়গ্রাম শ্রমজীবী ক্যান্টিনে আয়োজিত ওই স্মরণসভায় ছিলেন সিপিআইয়ের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক মনোরঞ্জন ঘোষ, দলের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফের রাজ্য সম্পাদক সৈকত গিরি, রাজ্য সভাপতি ইব্রাহিম গাজি, বিকেএমইউয়ের রাজ্য সম্পাদক তপন গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ।

এদিন ক্যান্টিনের ৪২ তম দিনে খাবারের মেনুতে ছিল মুরগির মাংস-ভাত, দু’রকম তরকারি ও মিষ্টি। এদিন বেশ কয়েকজন দরিদ্র অভুক্তকে বিনামূল্যে খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম শ্রমজীবী ক্যান্টিনের পরিচালক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এআইএসএফের রাজ্য সহ-সম্পাদক প্রতীক মৈত্রের বাবা প্রয়াত প্রদীপ মৈত্রকে শ্রদ্ধা জানাতে এদিন ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমীর অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্রের মত বহু অরাজনৈতিক বিশিষ্টজনও উপস্থিত ছিলেন। গত ১ অক্টোবর থেকে সিপিআইয়ের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শহরে চালু হয়েছে ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’। রেল স্টেশন লাগোয়া সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র কার্যালয়ে ওই ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। মাত্র কুড়ি টাকায় প্রতিদিন দুপুরে সেখানে মেলে ভরপেট খাবার। সপ্তাহের সাতদিনই ওই ক্যান্টিন থেকে দুপুরে সুলভ দামে খাবার পাওয়া যায়। তবে হতদরিদ্রদের খাবার দেওয়া হয় বিনামূল্যে।

আরও পড়ুন : করোনায় আক্রান্ত কিশোর, বহুতল জীবাণুমুক্ত করল পুরসভা

সিপিআই নেতাদের দাবি, লকডাউন পর্বে সবার আগে সিপিআইয়ের উদ্যোগে জেলায় ‘চলমান ক্যান্টিন’ চালু করা হয়েছিল। শহরের ন’টি জায়গায় ন’দিন ধরে রান্না করা খাবার বিলি করা হয়েছিল দরিদ্র বাসিন্দাদের। পরে গ্রামীণ এলাকাতেও একই ভাবে সিপিআইয়ের উদ্যোগে চলমান ক্যান্টিন করে বাসিন্দাদের খাবার বিলি করা হয়েছিল। সিপিআই নেতৃত্বের দাবি, লকডাউন পর্বে কর্মীদের এবং শুভানুধ্যায়ীদের দানে চলমান ক্যান্টিন করে গবির মানুষদের নিখরচায় খাবার দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েই এই ধরনের স্থায়ী ক্যান্টিন গড়ার ভাবনা আসে।

প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রমজীবী ক্যান্টিনে স্মরণসভা

যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন দেখে ঝাড়গ্রামেও অনুরূপ ক্যান্টিন চালু করার জন্য দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শহরে রোজই বহু মানুষ নানা প্রয়োজনে আসেন। এদের একটা বড় অংশ দরিদ্র শ্রেণির। কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজন, গ্রাম থেকে আসা টোটোচালক, আউটডোরে দেখাতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজন, দিনমজুরির কাজে আসা বহু মানুষের পক্ষে হোটেলের চড়া দামে খাবার কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই নামমাত্র দরে সুষম খাবার দেওয়ার জন্যই এমন ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন দু’শো জনের খাবার মেলে এই ক্যান্টিন থেকে।

আরও পড়ুন : জঙ্গলমহলের বাঁদনা-পরবে দেবজ্ঞানে জীবসেবা

সকাল ন’টা থেকে ১১টার মধ্যে আগাম কুপন সংগ্রহ করতে হয়। দুপুর ১ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়। প্রতিদিন দু’শো জনের খাবার তৈরি করতে খরচ পড়ছে ৬ হাজার টাকা। ফলে ২০ টাকায় প্রতি প্যাকেট খাবার দেওয়া হলে প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে দু’হাজার টাকা। সেই টাকা বহন করছেন কর্মীরাই। শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে দান পাওয়া গেলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে খাবার দেওয়া যাবে বলে আশাবাদী সিপিআই নেতৃত্ব। শ্রমজীবী ক্যান্টিনের দায়িত্বে রয়েছেন সিপিআইয়ের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

মূল তদারকিতে রয়েছেন সিপিআইয়ের যুব সংগঠন এআইওয়াইএফ নেতা শ্রীদীপ মুখোপাধ্যায়, গুরুপদ মণ্ডল, ছাত্র সংগঠন এআইএসএফের রাজ্য সহ-সম্পাদক প্রতীক মৈত্র ও জেলা সম্পাদক দেবাশিস ভুই। ক্যান্টিনের স্লোগান: ‘কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না’।

আরও পড়ুন ::

Back to top button