ঝাড়গ্রাম: মহামারীর মরশুম কেড়ে নিয়েছে কবিকে। গত বছর আগস্টে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ঝাড়গ্রামের ভূমিপুত্র বিশিষ্ট কবি বিমান মাহাতো। কলকাতার বাসিন্দা হলেও ঝাড়গ্রামের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল তাঁর। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনার বিদ্যাসাগর কলেজের অবসরপ্রাপ্ত বাংলার অধ্যাপক ছিলেন বিমানবাবু। প্রয়াত কবির স্মরণে তমলুকের কালবেলা পত্রিকা গোষ্ঠীর উদ্যোগে পত্রিকার ‘বিমান মাহাতো বিশেষ সংখ্যা’ প্রকাশিত হল রবিবার।
এদিন ঝাড়গ্রাম শহরের পান্থসখায় ‘সাহিত্যের আড্ডা’র এক অনুষ্ঠানে বিশেষ সংখ্যাটি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হল। ছিলেন ঝাড়গ্রাম সাহিত্যের আড্ডার সম্পাদক বংশী প্রতিহার, কালবেলা পত্রিকার সম্পাদক নিতাই জানা, প্রয়াত কবি বিমান মাহাতোর স্ত্রী ও মেয়ে। ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট কবি স্বপন মল্লিক, দিলীপ দাস, তপন চক্রবর্তী, সুকমল বসু, কৌশিক বর্মন, আশুতোষ রানা, শিখা মল্লিক প্রমুখ বিমানবাবুর স্মৃতিচারণ করেন।
আরও পড়ুন : মনে রাখবেন এবারের নির্বাচন বাংলাকে বাঁচানোর : Mamata Banerjee
বিমানবাবুর জন্ম ১৯৫৫ সালে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের পাথরা গ্রামে। তাঁর বাবা সুরেন্দ্রনাথ মাহাতো এক সময়ে ছিলেন গোপীবল্লভপুরের কংগ্রেসী বিধায়ক। বিমানবাবুর পড়াশোনা ঝাড়গ্রামের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন স্কুলে এবং ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর। অধ্যাপনার পাশাপাশি, নিয়মিত কবিতা চর্চা করতেন তিনি। অবসরের পরে কবিতা চর্চাই ছিল ধ্যান জ্ঞান।
কলেজে পড়ার সময়ে কবিতা লেখার শুরু। পরে ঝাড়গ্রামের কবি অশোক মহান্তীর পান্থসখা হোটেলে সাহিত্যের আড্ডায় নিয়মিত হাজির থাকতেন। বিমানবাবু সম্পর্কে কবি সংযম পাল জানাচ্ছেন, ‘‘বাংলা কবিতার ইতিহাসে বিমান মাহাতোর অবদান তাঁর ত্রুটিহীন ছন্দদক্ষতা ও বাংলা ভাষার বৌদ্ধিক ও সংযত ব্যবহার।’’
‘দেবীসূক্ত প্রাকৃতজনের’ কাব্যগ্রন্থটি দিয়ে আটের দশকের উল্লেখযোগ্য কবি হিসেবে বিমানবাবুর উত্থান। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা সাত। যার মধ্যে ‘যে আমি আবর্তমান’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য ২০০৮ সালে বীরেন্দ্র পুরস্কার পান তিনি।