সিরিয়া যুদ্ধের এক দশক, প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের প্রাণহানি
এক দশক ধরে চলা যুদ্ধে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে সিরিয়ায়। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়েই বেড়েছে বেশী। গতকাল মঙ্গলবার (১ জুন) ব্রিটেন-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় ২০১১ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমন থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪৩৮ জন নিহত হয়েছেন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান রামি আব্দেল রহমান সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের ব্যাপারে জানান, এসব মৃত্যুর বেশিরভাগই ঘটেছে ২০১২ সালের শেষের দিক থেকে ২০১৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। সম্প্রতি যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। যাদের মধ্যে মধ্যে ৪২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বেশিরভাগের মৃত্যুই হয়েছে সিরিয়ার শাসকগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত কারাগারে নির্যাতনে-নিপীড়নে।
পরিসংখ্যানে বলা হয়, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী এবং মিত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর হামলায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ৫৯ হাজার ৭৭৪ জন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১১ সাল থেকে দেশটির সরকারি কারাগার এবং বন্দি শিবিরে ৫৭ হাজার ৫৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারাগার ও বন্দি শিবিরে মৃত্যুর এই সংখ্যা গত মার্চে প্রকাশিত পরিসংখ্যানের তুলনায় ১৬ হাজার বেশি।
সিরীয় যুদ্ধে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোরও ৬৮ হাজার ৩৯৩ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই যুদ্ধে অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ৭৯ হাজার ৮৪৪ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম জানায়, রাশিয়ার সমর্থনে ২০১৫ সালে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ের পর সিরিয়ার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভূখণ্ড দামেস্ক সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় আছেন। চলতি বছরের মে মাসে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সাত বছর মেয়াদের নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো জয়ী হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ এক দশকের সংঘাতে সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।