আন্তর্জাতিক

পাঞ্জশির সংকট যেভাবে সমাধান করল তালেবান

পাঞ্জশির সংকট যেভাবে সমাধান করল তালেবান - West Bengal News 24

পাঞ্জশির উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবানের সঙ্গে আহমেদ মাসুদের সমঝোতা হয়েছে। এতে কেউ কারো অবস্থানে হামলা চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় পারওয়ান প্রদেশের রাজধানী চারিকারে তালেবান প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সালেহ-মাসুদ বাহিনীর এ সমঝোতা হয়। খবর জিয়ো নিউজের।

আফগানিস্তানের প্রায় ৯৮ শতাংশ দখল করে ফেললেও পাঞ্জশিরে আটকে গেছে তালেবান। এমনকি গত সপ্তাহে পাঞ্জশিরে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের পতাকাও উড়িয়েছে সালেহ-মাসুদ বাহিনী।

মাসুদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কাবুল থেকে তালেবানের একটি প্রতিনিধিদল আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় পারওয়ান প্রদেশের রাজধানী চারিকারে ছুটে গিয়েছিল।

আরো পড়ুন : নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে ফেরার আহ্বান তালেবানের

সাবেক আফগান সংসদ সদস্য আব্দুল হাফিজ মানসুর বলেন, বৈঠকে দু’পক্ষ এই সমঝোতায় উপনীত হয়েছে যে, কেউ কারো অবস্থানে হামলা চালাবে না এবং পাঞ্জশিরে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাবে। এর অর্থ হচ্ছে আপাতত পাঞ্জশির আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকছে।

১৯৮০’র দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান আগ্রাসনকালে উপত্যকাটি আরও বিখ্যাত হয়ে ওঠে। প্রায় দশ বছর দখলকারি কায়েম রাখলেও সব রকম চেষ্টা-তদবির করেও পাঞ্জশির দখলে নিতে পারেনি সোভিয়েত সেনারা।

তাদের সব কৌশলই ব্যর্থ করে দেন বর্তমান ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) নেতা আহমদ মাসুদের বাবা গেরিলা কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদ। যিনি শুধু এই পাঞ্জশির উপত্যকা নয়, পুরো আফগানিস্তানেই পরিচিত। সে সময় হাজার হাজার সেনা পাঠিয়ে, হেলিকপ্টার ও ট্যাংকযোগে হামলা চালিয়েও তাকে পরাজিত করতে পারেনি সোভিয়েত ইউনিয়ন।

আরো পড়ুন : কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে: বাইডেন

এরপর আসে তালেবান। ১৯৯৬-এ যখন গোটা আফগানিস্তান প্রায় তাদের দখলে, তখনও পাঞ্জশিরে নিজেদের ভূমির নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলেন স্থানীয় নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের বাহিনী।

তালেবান ও আলকায়দার বিরুদ্ধে বারবার গলা তোলায় ২০০১ সালে ওসামা বিন লাদেনের নির্দেশে আলকায়দার হাতে খুন হতে হয় তাকে। কিন্তু তার পরেও পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি তালেবান।

আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের একটি এই পাঞ্জশির। পাঞ্জশিরের অর্থ পাঁচ সিংহ। বলা হয়, দশম শতকে এই প্রদেশে পাঁচ ভাই মিলে বন্যার পানি ধরে রেখেছিল একটি বাঁধ তৈরি করে। গজনির সুলতাম মাহমুদের নির্দেশে সেই বাঁধ তৈরি করা হয়েছিল বলে কথিত আছে। সেই পাঁচ ভাইয়ের সম্মানে এই প্রদেশের নাম হয়ে যায় পাঞ্জশির।

আরো পড়ুন : কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনাসহ নিহত শতাধিক

এই প্রদেশ প্রাকৃতিক একটি দুর্গ। চতুর্দিকে হিন্দুকুশের পর্বত। মাঝে একটুকরো সমতল। এই এলাকাতে মোট এক লাখ ৭৩ হাজার মানুষের বাস। অধিকাংশই মানুষই জাতিতে তাজিক। দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে তাজিকদের। মূলত জাতিগতভাবে তারা যোদ্ধা মনোভাবের। সমরবিদ্যাই তাদের প্রধান শক্তি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button