ঝাড়গ্রাম

হামলায় সংকটজনক তৃণমূল নেতা, বিজেপির অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পথ অবরোধ

স্বপ্নীল মজুমদার

হামলায় সংকটজনক তৃণমূল নেতা, বিজেপির অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পথ অবরোধ - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: বাঁধগোড়া অঞ্চল তৃণমূলের নেতা সুবীর ঘোষের উপর আক্রমণের ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান সহ আট জন গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ঘণ্টা দু’য়েক রাস্তা অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন। বিক্ষোভের লক্ষ্য পুলিশ। বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতা-কর্মীরা রাস্তায় প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে পড়ে স্লোগান দিতে থাকেন, দেড় মাস পরেও কেন অভিযুক্ত বিজেপির প্রধান ও কর্মীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারছে না।

সেই অভিযোগ তুলে ক্ষোভ দেখান তাঁরা। রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া অঞ্চলের বাইসন চকে তৃণমূলের ওই অবরোধের ঘটনায় অস্বস্তি শুরু হয়েছে জেলা পুলিশ মহলে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাঁধগোড়া পঞ্চায়েতের দু’জন বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেন। ওই বিজেপি সদস্যদের যোগদান পর্বে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন অঞ্চল তৃণমূলের নেতা সুবীর ঘোষ। ওইদিন যোগদান পর্ব শেষ হওয়ার পরে স্থানীয় একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন সুবীর ও কয়েকজন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, আচমকা বিজেপি শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রদীপ ডিহিদারের নেতৃত্বে বিজেপির লোকজন সুবীর ও অন্য তৃণমূল কর্মীদের উপর চড়াও হন। আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন সুবীর।

হামলায় সংকটজনক তৃণমূল নেতা, বিজেপির অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পথ অবরোধ - West Bengal News 24

লোহার রড দিয়ে প্রবল মারধর করা হয় তাঁকে। হামলা চালিয়ে চম্পট দেয় বিজেপির অভিযুক্তরা। গুরুতর জখম সুবীরকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক হাড় ভেঙে যায়। তৃণমূলের তরফে পঞ্চায়েত প্রধান সহ বিজেপির ৯ জনের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। এক বিজেপি কর্মীকে ধরাও হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্তরা এখনও পলাতক। তৃণমূলের অভিযোগ, অভিযুক্ত বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান ও কর্মীরা ঝাড়গ্রামে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের আশ্রয়ে লুকিয়ে রয়েছেন। পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবেই অভিযুক্তদের ধরছে না। যদিও জেলা পুলিশের এক অফিসার জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের ধরা হবে।

আরও পড়ুন : হত্যার ৩৪ বছর: ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যু ঘিরে রয়েছে রহস্য

এদিন বেলা বারোটা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বাইসন চকে অবরোধের ফলে ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম থানার আইসি ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অবরোধ তোলেন। জখম সুবীর ঘোষকে ঝাড়গাম থেকে কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে দীর্ঘদিন ভর্তি থাকার পরেও তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটজনক থাকায় হাড়ের অস্ত্রপ্রচার করা সম্ভব হয়নি। প্লাস্টার করে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ আপাতত তাঁকে রিলিজ করে দিয়েছেন। সুবীরবাবু ঝাড়গ্রামের জয়নগর গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। সেখানেই রয়েছেন তিনি। কিছুদিন আগেই বন প্রতিমন্ত্রী তথা গ্রামের বিধায়ক বিরবাহা হাঁসদা, জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো প্রমুখ নেতৃত্ব সুবীরবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে দেখে এসেছেন।

সুবীরবাবুর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে কবে তিনি সুস্থ হবেন সে ব্যাপারে এখনও আশার আলো দেখাতে পারছেন না চিকিৎসকরা। এমন অবস্থায় কার্যত ভেঙে পড়েছেন সুবীরবাবুর পরিজনরা। তাঁরা বলছেন, “কিভাবে যে মানুষটাকে সুস্থ করে তুলবো ভেবে পাচ্ছি না কোথা থেকে যে কি হয়ে গেল।” যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের আশ্বাস সুবীরবাবুকে সুস্থ করে তোলার জন্য দলের তরফে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে তৃণমূলই এলাকার পরিবেশ অশান্ত করতে চাইছে। জেলা তৃণমূলের নেতা অজিত মাহাতো বলেন, “বিজেপির দুই সদস্য স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দেন। সেটা মানতে না পেরে পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি হামলা চালিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করার অপচেষ্টা করছে। জনগণ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করে কড়া জবাব দেবেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button