আন্তর্জাতিক

রাশিয়ায় গিয়ে ‘অপমানিত’ হলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Liz Truss : রাশিয়ায় গিয়ে ‘অপমানিত’ হলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী - West Bengal News 24

ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকার চলমান উত্তেজনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার মস্কো সফরে গিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। কিন্তু লিজকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শীতল অভ্যর্থনা জানিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মস্কো সফরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন লিজ।

বৈঠক শেষে লিজ ট্রাসের পাশে দাঁড়িয়ে ল্যাভরভ সাংবাদিকদের বলেন, আমি সত্যিই হতাশ। দ্বিপাক্ষিক আলোচনাকে বোবা এবং বধির ব্যক্তির মধ্যে কথোপকথন বলে উল্লেখ করেছেন ল্যাভরভ। তাদের বিস্তারিত আলোচনা মোটেও ফলপ্রসু হয়নি বলে জানান তিনি। ল্যাভরভ আরও বলেন, তার দল যেসব ‘তথ্য’ তুলে ধরেছেন লিজ সেসব আমলে না নিয়ে নাকচ করে দিয়েছেন।

ইউক্রেনের কাছে রুশ সেনা মোতায়েন কারো জন্য সরাসরি হুমকি নয় রাশিয়ার এই বক্তব্যের বিষয়ে ল্যাভরভকে চ্যালেঞ্জ করেন লিজ। লিজ বলেন, ইউক্রেনকে হুমকি দেওয়া ছাড়া সীমান্তে এক লাখ সেনা মোতায়েন করার অন্য কোনো কারণ দেখতে পাচ্ছি না। আর রাশিয়া যদি কূটনৈতিক বিষয়ে গুরুত্ব দেয়, তাহলে তাদের সেই সৈন্যদের অপসারণ করতে হবে এবং হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ন্যাটো এই অঞ্চলের নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করছে বলে রাশিয়ার দাবিও করে নাকচ করে দেন লিজ।

ট্রাস এবং লাভরভের মধ্যে বাক্য বিনিময় কতটা ‘বরফশীতল’ ছিল তা দ্রুত পরিষ্কার হয়ে যায় যখন তারা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাদের বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে লন্ডন মস্কোর কথা শুনছে না। স্পষ্টতই, দুই মন্ত্রী চোখে চোখ রাখেননি. দুই পক্ষের মধ্যে একটা বিশাল দূরত্ব রয়েছে, যা আজকের এই বৈঠকে পরিষ্কার হয়েছে’।

এই আলোচনা এমন এক সময়ে হল যখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রাসেলসে ন্যাটো সদর দপ্তর পরিদর্শন করছেন এবং জার্মানির নেতা বার্লিনে বাল্টিক রাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন যেখানে রাশিয়া, ইউক্রেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের কর্মকর্তারাও ছিলেন।

ওদিকে, ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার বেলারুশে রাশিয়া এই শক্তিশালী সামরিক মহড়া শুরু করে বলে জানা গেছে। ওদিকে, ইউক্রেনে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

‘ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার ক্রমবর্ধমান হুমকির’ কারণে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন এই নির্দেশনা জারি করে। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানায়, ‘রাশিয়ার হামলার ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং করোনা মহামারির কারণে ইউক্রেনে এখন কেউ ভ্রমণ করবেন না। আর যারা এখন ইউক্রেনে অবস্থান করছেন তাদের অবিলম্বে বাণিজ্যিক বা ব্যক্তিগত উপায়ে দেশটি ত্যাগ করা উচিত’।

আরও পড়ুন: মৃত্যু হয়েছিল দুই বছর আগে, চেয়ারে বসা কঙ্কাল উদ্ধার

এদিকে মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন খোদ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাত্‍কারে তিনি এই আহ্বান জানান।

পূর্ব ইউরোপে সম্ভাব্য বড় ধরনের সংঘর্ষের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সাক্ষাত্‍কারে জো বাইডেন বলেন, ‘মার্কিন নাগরিকদের এখনই (ইউক্রেন) ত্যাগ করা উচিত। আমরা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্‍ একটি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছি। এটি পুরোপুরি আলাদা একটি ব্যাপার এবং পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়ে যেতে পারে’।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

এর আগে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে নিযুক্ত কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের দেশটি ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইউক্রেনে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদেরও সেসময় দেশটি ছাড়ার কথা বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছিল ওয়াশিংটন।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button