বর্ধমান

শুনলে মনে হবে কোনো ক্রাইম পেট্রোলের গল্প, কিন্তু না বাস্তবে এরকমই এক মর্মান্তিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে থাকলো পশ্চিম বর্ধমানের দূর্গাপুর

শুনলে মনে হবে কোনো ক্রাইম পেট্রোলের গল্প, কিন্তু না বাস্তবে এরকমই এক মর্মান্তিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে থাকলো পশ্চিম বর্ধমানের দূর্গাপুর

শুনলে মনে হবে কোনো ক্রাইম পেট্রোলের গল্প কিন্তু না বাস্তবে এরকমই এক ঘটনা ঘটল পশ্চিম বর্ধমানের দূর্গাপুরে। রবিবার ভোরে মিলনপল্লির বাসিন্দা অমিত মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ঘর থেকে। তাঁর স্ত্রী, সাত বছরের ছেলে ও এক বছরের মেয়ের দেহ ঘরের মধ্যে পড়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও।

পরিবারের অভিযোগ, সম্পত্তির জেরেই খুন। মৃত্যুর আগে পরিবারের কয়েকজনকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে একটি বার্তা দেন অমিত সেখানে লেখা ছিল WE QUIT! আমরা ৪ জন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর জন্য ২ জন দায়ী।’ মৃত্যুর খানিক আগে পরিচিতদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছিলেন এই মেসেজ। মেসেজ দেখে কেউ কেউ তড়িঘড়ি যোগাযোগও করার চেষ্টা করেন কিন্তু, ততক্ষণে সব শেষ। আর তাতেই পরিবারের লোকের সন্দেহ দানা বাঁধে। তাঁদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন তাঁর মা বুলারানি মণ্ডল সহ মামার বাড়ির বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন সহ অন্য আত্মীয়দের। হোয়াটসঅ্যাপে সকলের নাম ধরে ধরে লিখেছেন অমিত। প্রচণ্ড মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অমিত। তাঁকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।

আরো জানা গেছে, অমিতের বাড়ির সিসিটিভি কালো পলিথিনে ঢাকা দেওয়া হয়েছিল বলে দাবী পরিবারের সদস্যদের । অভিযোগ, অমিতের মা বুলারানী মণ্ডল এই বাড়িতেই নিচের তলার রুমে ছিলেন। আরো অভিযোগ তিনি তার ছেলে, বৌমা নাতি ও নাতনিকে দেখতে পারতেন না। যা সবাই জানতো।

প্রতিবেশীরা জানান, সম্পত্তির বিবাদের জেরে মায়ের সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। মা থাকতেন মামার বাড়িতে। সেখান থেকেই বিভিন্নভাবে তাঁকে তাঁর মা আত্মীয়দের দিয়ে মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অমিত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে লিখেছিলেন। কার কার কাছে, কত টাকা পান, সে কথাও হোয়াটসঅ্যাপে লিখেছেন। সমস্ত বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি কুমার গৌতম ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করেন। যাদের বিরুদ্ধে, যেসব নাম তাঁর মেসেজে লেখা আছে, সকলকেই আটক করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি কুমার গৌতম। যাঁরা তাঁকে বিব্রত করেছেন দিনের পর দিন, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের পুরোটা জুড়ে তাঁদের নাম লিখে গিয়েছেন অমিত। এ ঘটনা আত্মহত্যা নাকি খুন, সে ব্যাপারটা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁদের দুই-একজন আত্মীয় প্রতিদিনই বাড়িতে যাতায়াত করছিলেন বলে খবর এবং নানান ভাবে তাঁকে মানসিক অত্যাচার করা হচ্ছিল। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে মিলনপল্লি এলাকায়। এলাকাবাসী এই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন পুলিশের কাছে এবং দোষীদের যেন চরম শাস্তি হয় তারও দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিবেশী তপন পাল বলেন, “ছেলেটির মায়ের সঙ্গে প্রায়শই সম্পত্তি নিয়ে ঝামেল হতো। যে অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনওভাবেই আত্মহত্যা নয়, এটা খুন। আগে খুন করে তারপর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” আর এক বাসিন্দা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গলায় দড়ি থাকলেও মাটিতে পা ঠেকে ছিল। হাতে দড়ি বাঁধা। ওই অবস্থাতেই ও পড়ে ছিল।

আরও পড়ুন ::

Back to top button