বর্ধমান

তৃণমূলের দায়িত্ব পূর্ণ পদে স্থান দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশকে, বিতর্ক তুঙ্গে

তৃণমূলের দায়িত্ব পূর্ণ পদে স্থান দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশকে, বিতর্ক তুঙ্গে

রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠার পর পুলিশের কাজে সহায়তার জন্য ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়।

কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা বিরোধীদের কাছে যেন চক্ষুশূল হয়ে উঠছে। বিরোধীরা সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশদের তৃণমূলের দলদাস হিসাবে আখ্যায়িত করে চলে। বিরোধীদের করা সেই অভিযোগেই যেন এবার শীলমোহর বসিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।

পূর্ব বর্ধমান জেলায় তৃণমূলের কমিটি প্রকাশ হবার পর দেখা যায় বিভিন্ন দায়িত্ব পূর্ণ পদে স্থান দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশকে। যা নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটার প্রাক্কালে জেলার কালনা ২ ব্লকের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।বিরোধীরা বলছে তাদের করা অভিযোগ সত্য প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মাস কয়েক আগে দলের ব্লক কমিটিতে জায়গা পাওয়া নেতা নেত্রীদের নাম প্রকাশ করা হয়। আর অতি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয় জেলা কমিটি। এর পরেই জানা যায় কালনা ২ নং ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলে দল পরিচালনার দায়িত্বে পেয়েছেন তিন সিভিক ভলান্টিয়ার সৈকত পুজারি, সঞ্জয় ঘোষ ও রেজাউল মণ্ডল। সঞ্জয় ঘোষ আবার কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুর অঞ্চলের যুব সভাপতি পদে দায়িত্ব পেয়েছে।এছাড়াও তালিকায় এক ভিলেজ পুলিশের নামও রয়েছে। তার নাম সৌভিক ঘোষ। তিন সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশ কালনা থানার অধীনে কর্মরত।

রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক পদে দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ার সৈকত পুজারির কাছে জানতে চাওয়া হলে তার সাফ জবাব ,’দল আমায় চাকরি দিয়েছে। ডিউটির পরে আমি রাজনীতি করতেই পারি’। একই উত্তর দেন অঞ্চলের যুব সভাপতি পদে দায়িত্ব পাওয়া অপর সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় ঘোষের বাড়ির লোকজন। যদিও তৃণমূলের সাংগঠনিক দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান ভিলেজ পুলিশ সৌভিক ঘোষ। তিনি বলেন,”তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কোন পদে আমি আছি কিনা জানি না। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে”।

সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ কর্ম নিয়ে মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের চাপে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের দায়িত্ব নির্দিষ্ট করেদিতে বাধ্য হয় রাজ্য সরকার । সেই মত ঠিক হয় আইনশৃঙ্খলা জনিত কোন বিষয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না ।সিভিক ভলাণ্টিয়াররা শুধমাত্র ভিড়,যান নিয়ন্ত্রণ এবং কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ কর্মীদের সহযোগীতা করতে পারবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

এই বিষয়টিকে উল্লেখ করে জেলা বিজেপি নেতা সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশ হিসাবে নিয়োগ করা হয় । তার পর থেকে প্রশাসনের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে ওঠে সিভিক ভলান্টিয়াররা।

আর এবার সরাসরি শাসক দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বানিয়ে দেওয়া হল সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশ দের। সৌমরাজ বাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে কোন ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের যাতে কাজে লাগানো না হয় সেই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানাবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব” ।

পাল্টা জবাবে কালনা ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রণব রায় বলেন,” সিভিক ভলান্টিয়াররা ভলান্টিয়ারি সার্ভিস দেয়। এর জন্য সরকার তাদের কিছু মজুরি দেয়। যেহেতু এরা রাজ্য সরকারের বেতনভুক কর্মী নয় তাই সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাজনীতি করার ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা আছে বলে মনে হয় না। আসলে জন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক অস্তিত্ব জানান দেবার জন্য এখন সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশদের পিছনে লেগেছে বলে প্রণব রায় মন্তব্য করেন”।

আরও পড়ুন ::

Back to top button