১২ জন মহিলাকে ডাইনি অপবাদে বাড়িছাড়া, প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি সুরাহা
বোলপুর সংলগ্ন সিয়ান-মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক আদিবাসী পরিবার বাড়িছাড়া।অভিযোগ, একাধিক আদিবাসী পরিবারের ১২ জন সদস্যকে ডাইনি অপবাদে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে। এবার ঘরে ফেরানোর দাবি নিয়ে মহকুমা শাসকের দুয়ারে হাজির তারা। তিন বছর ধরে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। বর্তমানে তাঁদের ঠিকানা কখনও রাস্তায়, কখনও বা স্টেশন চত্বরে, বাসস্ট্যান্ডে, খোলা আকাশের নীচে।
সোমবার বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ দেখায় পরিবারগুলি। তাদের দাবি, যতক্ষণ না তারা বাড়ি ফিরতে পারছে, অবস্থানেই থাকবে। এই পরিবারগুলির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তপশিলি জাতি উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর ও সংখ্যালঘু যৌথমঞ্চ।
তারা বলছে, পুলিশ প্রশাসন যতদিন না পরিবারগুলিকে যথাযথ নিরাপত্তা দিয়ে গ্রামে ফেরাতে পারছে, ততদিন সরকারিভাবে ভরণপোষণের দায়িত্ব নিক। তবে এ নিয়ে প্রশাসনের কারও কোনও বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলে তা যুক্ত করা হবে এই প্রতিবেদনে।
বোলপুর থানার অন্তর্গত সিয়ান-মুলুক গ্রামপঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত ওই গ্রামে তিন বছর আগে কুকুরের কামড়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের। ওই কুকুরটি কার্যত পাগল হয়ে আরও বেশ কয়েকজনকে কামড়েছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গ্রামের তিন পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়।
২০২০ সালের এই ঘটনায় গ্রামে সাতজনের নেতৃত্বে বসে সালিশি সভা। ডাইনি বলে চিহ্নিত করে দুর্ঘটনার জন্য ওই পরিবারগুলিকে দায়ী করা হয়। সেই সালিশি সভায় নিদান দেওয়া হয় ৩টি পরিবারের ১২জন সদস্যকে গ্রাম ছাড়া করা হবে।
তপশিলি জাতি উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর ও সংখ্যালঘু যৌথমঞ্চের তরফে বৈদ্যনাথ সাহা বলেন, “যে তিনটি পরিবার তিন বছর ধরে গ্রামছাড়া তাদের পুনর্বাসনের দাবিতে মহকুমা শাসকের দফতরে এসেছি। এর আগে এসপি থেকে এসডিপিও সকলকে জানিয়েও কাজ হয়নি। তারা বলছে, চেষ্টা করছে, দেখছে। আমাদের বক্তব্য, নিরাপত্তা দিয়ে গ্রামে দ্রুত ফেরাতে হবে এই পরিবারগুলিকে। আর তা যতদিন না পারছে সরকারি আবাসন বা প্রশাসনিক ভবনে এই পরিবারগুলির থাকা খাওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকে।”