ঝাড়গ্রাম

দরজা খোলেননি বৃদ্ধ, লক ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকল পুলিশ!!

দরজা খোলেননি বৃদ্ধ, লক ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকল পুলিশ!! - West Bengal News 24

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: রোজদিনের মতো সকালে বেঙ্গালুরু থেকে বাবাকে ফোন করেছিলেন রঞ্জন মুখোপাধ্যায়। কিন্তু মোবাইলে রিং হয়েই যাচ্ছে। ফোন তো তুলছেন না ব্রহ্মপ্রসাদ! অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে রঞ্জনের।

রঞ্জনের বাবা ৮০ বছরের বৃদ্ধ ব্রহ্মপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় থাকেন ঝাড়গ্রাম শহরের সাততলা ‘মেঘদূত’ আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাটে। বছর দশেক আগে ব্রহ্মপ্রসাদের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ঝাড়গ্রামের একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ব্রহ্মপ্রসাদ ঝাড়গ্রামের ফ্ল্যাটে একাই থাকেন। রোজই বেঙ্গালুরু থেকে রঞ্জন ফোন করে তাঁর বাবাকে সুপ্রভাত জানান।

আরও পড়ুন : করোনা ও মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে মাস্ক ও মশারি বিলি করল গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ

কিন্তু বৃহস্পতিবার বেলা গড়িয়ে গেলেও ছেলের ফোন ধরেননি ব্রহ্মপ্রসাদ। শেষ পর্যন্ত রঞ্জন ঝাড়গ্রামের পরিচিতজনদের ফোন করেন। আশেপাশের পড়শিরা ডোর বেল বাজালেও দরজা খোলেননি ওই বৃদ্ধ। রঞ্জন বিষয়টি ফোন করে জানান ঝাড়গ্রামের তরুণ সমাজসেবী প্রতীক মৈত্রকে। প্রতীক খবর দেন ঝাড়গ্রাম থানায়। শেষ পর্যন্ত দুপুরে পুলিশ এসে দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে প্রায় অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই বৃদ্ধ। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। তাই তিনি ছেলের ফোনও ধরতে পারেননি। উঠে দরজাও খুলতে পারেননি। ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশের তৎপরতায় এদিন ব্রহ্মপ্রসাদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

পরে পুলিশের উদ্যোগে ওই বৃদ্ধকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের ট্রু-ন্যাট যন্ত্রে তাঁর কোভিড পরিক্ষার ফল নেগেটিভ মেলে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধের কিডনির সমস্যা রয়েছে। এছাড়া তিনি বার্ধক্যজনিত কারণেও অসুস্থ। পুলিশ জানিয়েছে, রঞ্জন বেঙ্গালুরু থেকে ফ্লাইট ধরে বাবাকে দেখতে আসছেন। ব্রহ্মপ্রসাদের মেয়ে-জামাই থাকেন পুনায়।

আরও পড়ুন : ঝাড়গ্রাম জেলায় হাতির হানায় মৃত ১, ক্ষতি তিনটি বাড়ির

পড়শিরা জানালেন, এর আগে গত মার্চ মাসে লকডাউনের সময়ও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ব্রহ্মপ্রসাদ। ওই সময় রঞ্জন বেঙ্গালুরু থেকে ফোন করে ঝাড়গ্রামের তরুণ সমাজসেবী প্রতীক মৈত্রের সাহায্য চেয়েছিলেন। প্রতীক ওই সময় ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক অর্ণাশিস হোতাকে অনুরোধ করে ফ্ল্যাটে এনে বৃদ্ধের চিকিৎসা করিয়েছিলেন। পড়শিদের কেউ কেউ বলছেন, অশক্ত বৃদ্ধ ব্রহ্মপ্রসাদকে এভাবে একা ফ্ল্যাটে রাখাটা নিরাপদ নয়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য