ঝাড়গ্রাম

দরিদ্রসেবায় ‘সেবাময়ী’ তনুকা সেনগুপ্ত-র উদ্যোগে মলিন মুখে খুশির মহাপঞ্চমী

দরিদ্রসেবায় ‘সেবাময়ী’ তনুকা সেনগুপ্ত-র উদ্যোগে মলিন মুখে খুশির মহাপঞ্চমী - West Bengal News 24
প্রতিবেদকের তোলা ছবি

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: কয়েকশো দরিদ্র গ্রামীণ মানুষের মুখে হাসি ফোটালেন সমাজসেবী তনুকা সেনগুপ্ত। ইচ্ছে থাকলে অসাধ্যসাধন করে দেখানো যায়, সেটা প্রমাণ করলেন এই গৃহবধূ। তনুকার বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলা শহরের কদমকানন এলাকায়।

বুধবার বেলপাহাড়ি ব্লকের শিমূলপাল অঞ্চলের প্রত্যন্ত পাহাড় ঘেরা ডাকাই গ্রামের নানা বয়সী মানুষের হাতে পুজোর নতুন পোষাক তুলে দিলেন তনুকা ও তাঁর সংগঠন ‘সবুজ-প্রাণ’-এর সদস্য-সদস্যারা। এমন উপহার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে আট থেকে আশি বছর বয়সী মানুষেরা।

বছর দশেক আগে তনুকা কয়েকজন শুভানুধ্যায়ীকে নিয়ে তৈরি করেছিলেন ‘সবুজ প্রাণ’ নামে একটি সেবামূলক সংস্থা। উদ্দেশ্য ছিল, সমাজের অবহেলিত দুঃস্থ মানুষজনকে সাহায্য করা। তনুকাকে সমাজসেবার কাজে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন তাঁর স্বামী বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত।

ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎবাবু বর্তমানে জামবনির পড়িহাটি প্রগতিসঙ্ঘ হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক পদে কর্মরত। বিশ্বজিৎবাবু ও কয়েকজন শুভানুধ্যায়ীদের দানে সারা বছর নানা ধরনের সমাজসেবামূলক কাজকর্ম করেন তনুকা।

তিনি জানালেন, পুজোর আগে অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য পোশাক ও নানা উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ডাকাই গ্রামে। সেখানে আশেপাশের দরিদ্র গ্রামবাসীদের ডেকে তাঁদের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: কাল রাজ্যের জন্য পুজোর বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী

দেওয়া হয় মাস্ক ও সানিটাইজার। ছোটদের দেওয়া হয় খাতা, পেন্সিল আর খেলার সামগ্রী। বয়স্কদের জন্য দেওয়া হয় ওআরএস আর প্রয়োজনীয় ওষুধ। পরে গাছগাছালি ঘেরা গ্রামের মাঠে রান্না করে গ্রামবাসীদের ভাত, ডাল, মুরগির মাংস আর মিষ্টি খাওয়ানো হয়।

সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত হতে চান না তনুকা। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের পাশে থাকার জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা। আর মনের জোর। এই দু’টোকে সম্বল করে সাধ্যমতো আর্ত মানুষের সেবার কাজ করে চলেছি।” প্রতি বছর বেলপাহাড়ির শিশুদের ঝাড়গ্রাম শহরের পুজো দেখানোর ব্যবস্থা করেন তনুকা।

দরিদ্রসেবায় ‘সেবাময়ী’ তনুকা সেনগুপ্ত-র উদ্যোগে মলিন মুখে খুশির মহাপঞ্চমী - West Bengal News 24
প্রতিবেদকের তোলা ছবি

এবার করোনা পরিস্থিতিতে ওই কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।ঝাড়গ্রামের আদিম জনগোষ্ঠীর শবর সম্প্রদায়ের অনেক মানুষের এখনও সরকারি জাতিগত শংসাপত্র নেই। শবরদের সরকারি শংসাপত্রের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তনুকা।

তনুকার আবেদনে সাড়া দিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন শবর জনগোষ্ঠীর যে সব মানুষের জাতিগত শংসাপত্র নেই, সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। অবশেষে গত বছর ঝাড়গ্রামে শিবির করে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কদমকানন ও শিরীষচক এলাকার শবরদের হাতে জাতিগত শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।

স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরাতে কাজ করে চলেছেন তনুকা। এখনও পর্যন্ত ২৮ জন স্কুলছুটকে স্কুলে ফেরাতে পেরেছেন তিনি। তাঁর এমন মহৎ কাজের জন্য তনুকাকে ‘সেবাময়ী’ নামে ডাকেন এলাকার দুঃস্থ-আর্তজনেরা।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য