ডাইনি সন্দেহে ঠাকুমার মুণ্ডু কেটে খুনের দায়ে নাতিকে ফাঁসির সাজা দিল ঝাড়গ্রাম আদালত
স্বপ্নীল মজুমদার
ঠাকুমাকে ডাইনি দেগে তার মুণ্ডু কেটে খুন করেছিল নাতি। তারপর সেই কাটা মুণ্ডু নিয়ে ঘুরেছিল গোটা গ্রাম। ছ’বছর আগের নৃশংস সেই ঘটনার মূল অভিযুক্ত রাধাকান্ত বেরা নামে এক যুবককে বুধবার ফাঁসির সাজা দিলেন ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। তবে বাকি তিন অভিযুক্তকে প্রমাণের অভাবে মামলা থেকে বেসকুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।
২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সাঁকরাইল থানার নওয়াগাঁ গ্রামে তরুবালা বেরা নামে পঁয়ষট্টি বছরের এক বৃদ্ধার মুণ্ডু কেটে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তার সম্পর্কিত নাতি রাধাকান্ত বেরাকে। তখন রাধাকান্তের বয়স ছিল কুড়ি। তরুবালার মেয়ে আরতি বেরার অভিযোগের ভিত্তিতে খুন, প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
পরে তদন্ত করে পুলিশ স্থানীয় ওঝা নন্দলাল বেরা, রাধাকান্তের বাবা মিহির বেরা ও মা কবিতা বেরাকেও গ্রেফতার করে। ওই বছরের ২৬ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছিল পুলিশ। পরে রাধাকান্ত বাদে বাকি তিন অবিযুক্ত কলকাতা হাইকোর্ট থেকে শর্তাধীন জামিনে ছাড়া পেয়ে যান।
২০১৮ সালের ২৯ জুন ঝাড়গ্রাম প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। সরকারি আইনজীবী সত্যজিৎ সিনহা বলছেন, ‘‘বিরলতম নৃশংস খুনের ঘটনার কারণেই আসামীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন বিচারক।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাধাকান্ত মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হতো। ওঝা ঝাড়ফুঁক করে জানিয়েছিল তরুবালা ডাইনি। সেই কারণেই রাধাকান্তের রক্ত চুষে খাচ্ছে তরুবালা। ঘটনার সন্ধ্যায় তরুবালাকে টেনে বাইরে নিয়ে গিয়ে শিবমন্দির থানে তাঁর মুণ্ডু কেটে খুন করেছিল রাধাকান্ত। তারপর কাটা মুণ্ডু নিয়ে গ্রাম ঘুরে মুণ্ডুটি ডোবায় ফেলে দিয়েছিল। পরে মুণ্ডুটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ।