ঝাড়গ্রাম

নিরক্ষর বাবা-মা চান, ছেলে হোক ইঞ্জিনিয়র, স্বপ্ন পূরণে বাধা অভাব

নিরক্ষর বাবা-মা চান, ছেলে হোক ইঞ্জিনিয়র, স্বপ্ন পূরণে বাধা অভাব

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: মাধ্যমিকে ছেলে ভাল ফল করেছে। কিন্তু বাবা-মায়ের চোখে জল, একরাশ চিন্তা! কীভাবে ছেলের স্বপ্নপূরণ করবেন, বেবে পাচ্ছেন না পেশায় ট্রলি চালক মান্তু দাস। মান্তুর স্ত্রী সুমিত্রা গৃহ-পরিচারিকার কাজ করেন। দু’জনের সামান্য আয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা।

ঝাড়গ্রাম শহরের বেনাগেড়িয়ার বাসিন্দা দাস-দম্পতির একমাত্র ছেলে ১৬ বছরের কৌশিক দাস এবার মাধ্যমিকে ৬০০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। টিনের ছাউনির মাটির খুপরি ঘরে টিমটিমে আলোয় গভীর রাত জেগে পড়াশোনা করে সাফল্য পেয়েছে কৌশিক। ভাল গৃহশিক্ষক ছিল না। বাবা-মা নিরক্ষর। পড়া দেখিয়ে দেওয়ার কেউ ছিল না। কেবল নামমাত্র টাকায় শহরের একটি কোচিং সেন্টার কৌশিককে পড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : দরজা খোলেননি বৃদ্ধ, লক ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকল পুলিশ!!

অভাব নিত্যসঙ্গী হলেও ছেলের পড়াশোনার আগ্রহকে উৎসাহ দিয়ে চলেছেন মান্তু ও সুমিত্রা। বুধবার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনেই কৌশিকের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন টিএমসিপি-র রাজ্য সম্পাদক আর্য ঘোষ ও এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর নবু গোয়ালা। শহরের বাণীতীর্থ হাইস্কুলের ছাত্র কৌশিক একাদশে নিজের স্কুলেই বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হতে চায়।

ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। মান্তু বলেন, ‘‘বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার খরচ তো অনেক। ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে তো ছেলেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। অভাবের সংসারে কীভাবে সেটা সম্ভব হবে বুঝতে পারছি না।’’ প্রাক্তন কাউন্সিলর নবু বলেন, ‘‘কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাতে কৌশিকের পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়, সেজন্য বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করছি।’’ তবে কৌশিকের খবর জেনে কলকাতাবাসী ঝাড়গ্রামের প্রবীণ সমাজসেবী বিষ্ণুপদ রায় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। পাড়া-প্রতিবেশীরা বলছেন, ‘‘ভাল গাইডেন্স পেলে কৌশিক আরও ভাল ফল করত।’’

আরও পড়ুন ::

Back to top button