ঝাড়গ্রাম: সত্তরের দশকে মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ থেকে হাল আমলের ‘ দি কাশ্মীর ফাইলস্’। দীর্ঘ ৪৫ বছরের অভিনয় জীবনের সায়াহ্নে এসেও তিনি বাঙালির মহাগুরু। বয়স সত্তর, কিন্তু তাঁকে ঘিরে আমজনতার আবেগে যে এতটুকুও মরচে ধরেনি সেটা প্রমাণ হল বৃহস্পতিবার বিকেলে। ঝাড়গ্রাম শহরের মুখ্যসরণিতে মিঠুন চক্রবর্তীকে ঘিরে ধরল জনস্রোত! প্রচারের শেষ দিনের শেষ বেলায় এদিন কপ্টারে ঝাড়গ্রাম শহরে উড়ে আসেন মহাগুরু। ঝাড়গ্রাম বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী সুখময় শতপথীর সমর্থনে রোড শো করেন মিঠুন।
তাঁকে দেখার জন্য পুরাতন ঝাড়গ্রাম থেকে পাঁচ মাথা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে থিক থিকে ভিড়। একটিবার চোখের দেখা দেখতে চান সকলেই। সাড়ে চারটায় সুখময়, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, বিজেপির শিক্ষক সেলের নেতা অশোক মহান্তী, জেলা নেতা অসীম নন্দী, রমেশ সরকার প্রমুখকে নিয়ে রোড শো শুরু করেন মিঠুন। বাঁধ ভাঙা জনস্রোত সামলাতে হিমশিম খান গেরুয়া শিবিরের যুব কর্মীরা। মিঠুনকে দেখে আপ্লুত আট থেকে আশির সেকি বিপুল উন্মাদনা।
আরও পড়ুন : ভোটপ্রচারের শেষ বেলায় লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএম প্রার্থী
সকলেই মহাগুরুর মুখ থেকে ‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে’, কিংবা ‘আমি জাত গোখরো এক ছোবলেই ছবি’র মতো অর্থপূর্ণ সংলাপ শুনতে চান। বিকাল পাঁচটা নাগাদ পাঁচ মাথা মোড়ে পৌঁছে মিঠুন গাড়ির উপর থেকে বলেন, “আরে বার বার ডায়লগ বললে ওখানে ইলেকশন কমিশনের লোক বসে আছে, আমাকে ধরবে।
কিন্তু আমি যেটা বলব সেটা তোমরা বুঝে যাবে, আমি……আমি…..গোখরো!” মিঠুন জনতার উদ্দেশে বলেন, “আমি শুধু একটা কথাই বলব, আমাদের স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার। আপনারা বিজেপিকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী করুন। তার পর দেখবেন ছ’মাসের মধ্যে এই বাংলা অটোমেটিক একদম ঘুরে যাবে।” সেই সোনার বাংলা গড়ার জন্য সবাই ঝাড়গ্রামে সুখময়কে ভোট দেবেন কিনা জানতে চান মিঠুন। জনস্রোতের কোলাহল থেকে ‘হ্যাঁ’ শুনে আশ্বস্ত মিঠুন বলেন, “তাহলে জহরদাকে (সুখময়) জিতিয়ে আনতে হবে।”
কয়েকদিন আগেই ঝাড়গ্রাম বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা হাঁসদাকে নিয়ে শহরে রোড শো করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিনেতা দেব। কিন্তু শহরবাসীর একাংশ বলছেন, দেবের রোড শো-র তুলনায় এদিন মহাগুরুর রোড শোতে অনেক বেশি ভিড় ছিল। শেষ বেলায় সেই ভিড় দেখে কিন্তু রাস্তার মোড়ে মোড়ে শুরু হয়ে গেল আলোচনা। শেষ হাসি কে হাসবেন? সুখময় নাকি বিরবাহা!