ঝাড়গ্রাম

এ ভাবেও ফেরা যায়? বোঝালেন বাঁধগোড়ার সুবীর ঘোষ

স্বপ্নীল মজুমদার

এ ভাবেও ফেরা যায়? বোঝালেন বাঁধগোড়ার সুবীর ঘোষ - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: এ ভাবেও ফিরে আসা যায়! প্রমাণ করলেন ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া অঞ্চল তৃণমূলের নেতা সুবীর ঘোষ। বিজেপির হামলায় গুরুতর আহত সুবীরবাবু প্রায় দু’মাস শয্যাশায়ী। কিন্তু সেই তিনিই মঙ্গলবার কর্মীদের মনোবল বাড়াতে প্লাস্টার করা ভাঙা হাত-পা নিয়েই এলেন বাঁধগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত চত্বরে।
এদিন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার সভা ছিল। উপপ্রধান মনা হাঁসদা আসেননি। বিজেপির বাকি পঞ্চায়েত সদস্যরাও অনুপস্থিত ছিলেন। তবে তৃণমূলের ৯ সদস্য সভায় হাজির ছিলেন। তৃণমূল সদস্যদের সহমতে উপপ্রধান পদ থেকে মনা অপসারিত হন। এর পর নতুন উপপ্রধান নির্বাচনের জন্য সভা ডাকবে ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রশাসন।

সুবীরবাবুর আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাস দু’য়েক ধরে সরগরম বাঁধগোড়া এলাকা।

ওই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। মাস দু’য়েক আগে সুবীরবাবুর উদ্যোগে বিজেপির দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। তাতেই বিজেপির বিষ নজরে পড়েন সুবীরবাবু। ওই দিন বিকেলে বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ ডিহিদারের নেতৃত্বে বিজেপির লোকজন লোহার রড, লাঠি, ধারাল অস্ত্র নিয়ে সুবীরবাবুর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। প্রকাশ্য দিবালোকে একটি দোকানে চা খাওয়ার সময় আক্রান্ত হন সুবীরবাবু। রডের আঘাতে তাঁর হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন হাড় ভেঙে যায়।

আরও পড়ুন : উদয়নের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’, বিবৃতি প্রকাশ করে উদয়নের মন্তব্যের জবাব দিল বিএসএফ

মারাত্মক আহত অবস্থায় প্রথমে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সুবীরবাবুর কিডনির সমস্যা থাকায় ভাঙা হাড়ের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। প্লাস্টার করেই এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ তাঁকে মাসখানেক আগে ছেড়ে দেওয়ায় তারপর থেকে তিনি জয়নগর গ্রামের বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর সুস্থ হতে সময় লাগবে।

এ ভাবেও ফেরা যায়? বোঝালেন বাঁধগোড়ার সুবীর ঘোষ - West Bengal News 24

সুবীরবাবুর উপর হামলার অভিযুক্ত পঞ্চায়েতের প্রধান পলাতক। প্রধান ফেরার থাকা অবস্থায় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের ৯ সদস্য। গত ৮ নভেম্বর বিজেপি সদস্যদের অনুপস্থিতিতেই তৃণমূল সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন প্রদীপ ডিহিদার। এদিন অপসারিত হলেন উপপ্রধান। বিজেপির জেলা নেতারা বলছেন, কৌশল করে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। আর তৃণমূল নেতা সুবীর ঘোষ বলছেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে পঞ্চায়েতের ক্ষমতার পরিবর্তন জরুরি ছিল। বিজেপি কোনও উন্নয়ন-কাজ করছিল না। বিজেপির সঙ্গে দু’জন সদস্য থাকতে না পেরে আমাদের দলে আসেন। কিন্তু বিজেপির লোকজন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আমাকে খুন করতে চেয়েছিল। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমি প্রাণে বেঁচেছি।

এদিন মাথায় টুপি, চোখে সানগ্লাস পরা সুবীরবাবুকে দেখে আবেগে ভাসেন তৃণমূল কর্মীরা। এদিন বাড়ি থেকে একটি মারুতি ভ্যানে দলীয় পতাকা লাগিয়ে আধশোয়া অবস্থায় বাঁধগোড়া পঞ্চায়েত অফিসের কাছে আসেন সুবীরবাবু। ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রেখা সরেনের সঙ্গে দেখা হয় সুবীরবাবুর। কুশল বিনিময় হয় উভয়ের মধ্যে। কর্মীরা বলছেন, এত আঘাত-যন্ত্রণা সহ্য করেও এদিন কিছুক্ষণের জন্য কর্মীদের কাছে যেভাবে সুবীরবাবু এসেছিলেন, তাতে সবাই বলছেন, “বাঘের বাচ্চা সুবীর ঘোষ একাই একশো!”

আরও পড়ুন ::

Back to top button