রাজ্য

টেনে হিঁচড়ে চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দিল পুলিশ! মধ্যরাতে ‘অপারেশন’

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

টেনে হিঁচড়ে চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দিল পুলিশ! মধ্যরাতে 'অপারেশন'

রাস্তা খালি করতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আচমকাই অভিযানে নামে পুলিশ। টেনে হিঁচড়ে, পাঁজাকোলা করে চাকরিপ্রার্থীদের তোলা হয় বাসে এবং প্রিজন ভ্যানে। তুলকালাম কাণ্ড করুণাময়ী চত্বর। টেট বিক্ষোভকারীদের দাবি, জোর করে মধ্যরাতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। আগে থেকে কোনও কিছু বলা হয়নি। তিনটি বাসে ঠাসাঠাসি করে ঢুকিয়ে আন্দোলনকারীদের আটক করে নিয়ে যান বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা। ধস্তাধস্তিতে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া অসুস্থও হয়ে যান।

টানা কয়েকদিন অনশনরত চাকরি প্রার্থীরা বিধ্বস্ত চেহারায় দু চোখ ভরা জলে বলেন, আমাদের হকের চাকরি দেওয়া হয়নি। তারই প্রতিবাদ জানানো হচ্ছিল। পুলিশ দিয়ে জোর করে আমাদের আন্দোলন তুলে দিল। আমাদের আগামী দিনের প্রতিবাদ আরও তীব্রতর হবে। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ৮৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনকে পুলিশকর্তারা কার্যত লণ্ডভণ্ড করে দেন পুলিশকর্তারা। ছিঁড়ে ফেলা হয় বিক্ষোভকারী পোস্টার, ব্যানার। তবে সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে মধ্যরাতে মহিলা বিক্ষোভকারীদের আটক করা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা (নন-ইনক্লুডেড) করুণাময়ীতে অবস্থানে বসেন। গত দু’ দিনে অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কয়েকজন আন্দোলনকারী। অভিযোগ, দু’বার ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার পরেও তাঁরা চাকরি পাননি। কিন্তু পর্ষদ দাবি করে, চাকরি পেতে গেলে নিয়ম মেনে ফের তাঁদের ইন্টারভিউ দিতে। কিন্তু আবারও ইন্টারভিউ দিতে নারাজ চাকরিপ্রার্থীরা। ইন্টারভিউ ছাড়াই ছাড়াই সরাসরি চাকরি দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।

এই দাবিতে অনশন করতে গিয়ে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী ইতিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতের দ্বারস্থ হয় পর্ষদ। আদালত জানায়, পর্ষদের কর্মীদের অফিসে যেতে কোনও সমস্যা যাতে না হয়, তা ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশকেই।

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, পর্ষদের অফিস চত্বরে জারি থাকা ১৪৪ ধারা কার্যকর করতে পারবে পুলিশ। সেইমতো এদিন গভীর রাতে আন্দোলনকারীদের সরাতে হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। অন্যদিকে, পুলিশি অভিযানের আঁচ পেয়েই এদিন রাতে ঘটনাস্থলে হাজির হন, সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, বিজেপির সজল ঘোষ সহ একাধিক বিরোধী নেতা-নেত্রী। তাঁরা পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেছেন।

বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন। ট্যুইট করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মমতা পুলিশ সল্টলেকে ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের উপর বল প্রয়োগ করছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড অফিসের কাছে তাদের বৈধ অবস্থান বিক্ষোভ জোরপূর্বক শেষ করতে। এটা পশ্চিমবঙ্গ না হিটলারের জার্মানি?

আরও পড়ুন ::

Back to top button