বেহাল ঝাড়গ্রাম শহরের সব রাস্তা, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে রাস্তার গর্ত ভরাট করতে উদ্যোগী পূর্ত দফতর
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
মুখ্যমন্ত্রীর ঝাড়গ্রাম সফরের আগে ভাঙাচোরা রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হল পূর্ত দফতর। আগামী ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে ঝাড়গ্রামে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ঝাড়গ্রাম শহরের রাস্তাঘাটের খুবই বেহাল অবস্থা। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন ঝাড়গ্রাম পুরসভার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
বিরোধীদের অভিযোগ, আঠারোটি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে। অথচ ২১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের অরণ্য শহরে সমস্ত রাস্তার বেহাল অবস্থা। ভাঙাচোরা খন্দপথ পর্যটন শহরের চেহারাটা ভয়ানক ভাবে হতশ্রী করে দিয়েছে। এজন্য অবশ্য শহরবাসীর একাংশ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দায় ছাপাচ্ছে তৃণমূলের দিকে। তাদের অভিযোগ তৃণমূলের কাউন্সিলরদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই শহরে রাস্তা ঘাটের সংস্কার হচ্ছে না।
পুরপ্রধান কবিতা ঘোষকে তাঁর দলের লোকেরাই মানছেন না। কবিতা পুরবোর্ডের বৈঠক ডাকলে সেখানে হাজির হচ্ছেন না তৃণমূলের অধিকাংশ কাউন্সিলর। ফলে পুরবোর্ডের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়াই সম্ভব হচ্ছে না। তৃণমূলের একাংশ কাউন্সিলরের অভিযোগ, পুরপ্রধান নিজের মর্জিমতো কাজ করেন। দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনাটুকু করেন না। এ কারণেই বেশিরভাগ দলীয় কাউন্সিলর পুরভবনে যান না।
কিন্তু এই পরিস্থিতি গত দেড় বছর ধরে চলতে থাকায় শহরের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। নিকাশি নালাগুলির অবস্থা শোচনীয়। জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। অথচ নির্বিকার পুরপ্রধান। তিনি কোন বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে চান না। বিরোধী কাউন্সিলরদের অভিযোগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী থাকাকালীন তার বদান্যতায় কবিতা পুরপ্রধান হন। কবিতার মাথার উপর তৃণমূলের বড় নেতাদের হাত রয়েছে। তাই তিনি কাজ না করেও বহাল তবিয়তে চেয়ারে করে বসে আছেন। পুরসভার এই ব্যর্থতায় তো প্রশাসনের বসে থাকলে চলবে না।
মুখ্যমন্ত্রী আসবেন হেলিকপ্টারে। কিন্তু কপ্টার থেকে ঝাড়গ্রাম ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সের অতিথিশালায় তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সড়ক পথে যেতে হবে। তাই ভাঙাচোরা রাস্তা গুলি সারাতে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ত দফতর নিজেই। পুরসভার একমাত্র বিরোধী কাউন্সিলর হলেন সিপিআইয়ের ছবি দাস। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পুরসভার কাজ করার ক্ষমতা নেই। শহরের উন্নয়নে পুরপ্রধানেরও কোনও সদিচ্ছা নেই। এখন রাস্তার ক্ষত যাতে মুখ্যমন্ত্রীর চোখে না পড়ে সেজন্য আই ওয়াশ হচ্ছে।”
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতো অবশ্য কবিতার পাশেই দাঁড়িয়েছেন। অজিত বলছেন, “কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা খারাপ হয়েছে। সেগুলি মেরামত করার কাজ শুরু হয়েছে।”