সম্পর্ক

সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ সময়ে নারীদের করণীয়

সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ সময়ে নারীদের করণীয়

যৌনমিলনের (সহবাস) পর আপনি হয়তো গোপনাঙ্গের সুস্থতা বজায় রাখার ব্যাপারে চিন্তা করেন। কিন্তু এ বিষয়ে এত বেশি ভুল ধারণা ছড়িয়েছে যে, যা অনুসরণ করলে গোপনাঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

তেমন একটি ভুল ধারণা হলো, বিশেষ পদ্ধতিতে গোপনাঙ্গের ভেতর পরিষ্কার করা। গোপনাঙ্গের ভেতর পরিষ্কারের প্রয়োজন হয় না, তবে বহিঃস্থ ত্বক পরিষ্কার করা যাবে। যৌন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সহবাসের পর গোপনাঙ্গের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন আছে- তবে ভুল পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। এখানে সহবাসের পর নারীরা যা করতে পারেন যেসব বিষয়ে উল্লেখ করা হলো।

* বাথরুমে যান:
লস অ্যাঞ্জেলেস অবস্টেট্রিসিয়ানস অ্যান্ড গাইনিকোলজিস্টসের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অ্যালিসন হিল এবং ইভন বন জানান, গোপনাঙ্গের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখা এবং মূত্রনালী সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর সহজ উপায় রয়েছে। তাদের মতে, তেমন একটি উপায় হলো- সহবাসের পর প্রস্রাব সেরে নেওয়া, যার ফলে জীবাণু বের হয়ে যাবে। অন্যথায় সহবাসের সময় ঢুকে পড়া জীবাণু মূত্রাশয় বা মূত্রনালিতে সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। ডা. হিল বলেন, ভুল পদ্ধতিতে ওয়াইপ করলেও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। যদি রেক্টামের জীবাণু গোপনাঙ্গে প্রবেশ ঠেকাতে চান, তাহলে সামনে থেকে পেছনে ওয়াইপ করুন।

আরও পড়ুন :: আপনার শরীরের গন্ধই জীবনসঙ্গীকে মুগ্ধ করে

* মৃদুভাবে পরিষ্কার করুন:
সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সহবাসের পর প্রস্রাব সেরে নেয়া খুবই কার্যকরী উপায়। তবে এতেই গোপনাঙ্গের সুস্থতা পুরোপুরি নিশ্চিত হয় না। গোপনাঙ্গ সুস্থ রাখতে মৃদুভাবে পরিষ্কারেরও প্রয়োজন হতে পারে। ডা. ইভন বলেন, গোপনাঙ্গের পিএইচ ব্যালেন্স ধরে রাখতে সহবাসের পর গোপনাঙ্গ থেকে বীর্য সরিয়ে ফেলতে হবে। এর ফলে ছত্রাক সংক্রমণ, মূত্রনালী সংক্রমণ ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ হবে।

সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ সময়ে নারীদের করণীয়

ডা. হিল জানান, ঘাম, বীর্য ও জীবাণু দূর করতে ভালোভাবে কুসুম গরম জল ও মিল্ড সোপ দিয়ে মৃদুভাবে পরিষ্কার করে নিতে পারেন। কোনো সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করবেন না।

* ভালোভাবে শুকিয়ে নিন:
ডা. ইভন সহবাসের পর প্রস্রাব সেরে নেয়া এবং কুসুম গরম জল-মাইল্ড সোপ দিয়ে ধোয়ার পর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুছে নিয়ে ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরতে পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ গোপনাঙ্গ ভেজা থাকলে ছত্রাক সংক্রমণের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। টাইট অন্তর্বাস পরিহার করুন, যেমন- নাইলনের অন্তর্বাস। এর পরিবর্তে কটনের অন্তর্বাস পরুন, অবশ্যই ঢিলেঢালা হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টাইট ফিটিং অন্তর্বাস পরলে গোপনাঙ্গের আর্দ্রতা বেড়ে গিয়ে জীবাণুর বংশবিস্তার বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন :: অধিকাংশ নারীই স্বামীর কাছে যে পাঁচ কথা গোপন করেন

* জল পান করুন:
সহবাসকালে ঘেমে গেছেন? তাহলে শরীরের হারানো জল পুনরুদ্ধারে এক গ্লাস জল পান করে নিতে পারেন। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হেলথের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নিকোল স্কট সহবাসের পর নারী-পুরুষ উভয়কে জল পানের পরামর্শ দিয়েছেন। গবেষণা বলছে, শারীরিক জলশূন্যতায় শরীরের বিভিন্ন অংশে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে- এমনকি গোপনাঙ্গতেও। এছাড়া শরীরে পর্যাপ্ত জল থাকলে মূত্রাশয়-মূত্রনালী থেকে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী জীবাণু দূর হয়ে যায়।

সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ সময়ে নারীদের করণীয়

* দই খান:
সহবাস পরবর্তীতে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন, বিশেষত প্রোবায়োটিক-সমৃদ্ধ খাবার। একটি সেরা প্রোবায়োটিক-সমৃদ্ধ খাবার হলো দই। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হেলথের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ কেলি কাস্পার বলেন, ‘সহবাসের পর দইয়ের মতো ফার্মেন্টেড ফুডস খেলে গোপনাঙ্গ ভালো ব্যাকটেরিয়া পেয়ে উপকৃত হয়।’ আরো নির্দিষ্টভাবে বললে বলতে হয়, প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার গোপনাঙ্গের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রেখে সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button