বাসন্তীতে তুলকালাম, ত্রাণশিবিরের মেনুতে শুধুই নিরামিষ খিচুড়ি কেন, মারধরে জখম ৩
ত্রাণশিবিরে খাবারের পাত পড়ছিল সকালে। কিন্তু শুধুই নিরামিষ খিচুড়ি দেখে ক্ষেপে ওঠেন একদল। তাঁদের অভিযোগ, এই খাবার খাওয়া যায়! মাছ-মাংস রান্না করে তিনবেলা খাওয়ানো হবে কোথায়, তবেই না সেবা! প্রতিবাদ করে ওঠেন আরেকদল, দুর্দিনে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে খাবার দেওয়া হচ্ছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাকুন। এরপরই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন আমিষ-পক্ষরা। মারধর হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। বাসন্তী থানার অন্তর্গত রাণিগড় এসএসকেএম স্কুলের ত্রাণ শিবিরে এমনটাই ঘটল আজ।
বাসন্তীর ওই ত্রাণ শিবিরে এদিন চরম আতঙ্ক ছড়ায়। খেতে বসে মাছ মাংস চাই বলে শোরগোলের পর বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন তিনজন। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে তাঁদের চিকিত্সা চলছে। জানা যায়, প্রশাসনের তরফে ইয়াস মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েই সুন্দরবন অঞ্চলে একাধিক ত্রাণ শিবির গড়ে তোলা হয়েছিল। অসহায় মানুষজন প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে সেগুলোয় আশ্রয় নিয়েছিলেন ।
রানিগড়ের এসএসকেএম স্কুলকেও তেমনই একটি ত্রাণ শিবিরে পরিণত করা হয়েছিল। ইয়াসের পূর্বাভাস পেয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন এলাকার বেশ কিছু মানুষ। কিন্তু সাইক্লোন তেমন হয়নি। হয়েছে জলোচ্ছ্বাস। উপকূলের কিছু অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও বাসন্তীর ওই ত্রাণ শিবিরে যাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের অধিকাংশই বৃহষ্পতিবার সকালে বাড়িতে ফিরে যান। কয়েকজন ফেরেন না, রয়ে যান।
জানা যায়, এদিন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়ে থাকা শাহজাহান সেখ,আমিন উদ্দিন লস্কর, রাজ্জাক লস্কর, কালাম শেখ’রা দাবি করতে থাকেন ত্রাণ শিবিরে মাছ মাংস রান্না করে তিন বেলা খেতে দিতে হবে।আর তাঁদের এমন কথায় প্রতিবাদ করে ওঠেন উমির আলি,জামীর আলি, আক্তার শেখ’রা। অভিযোগ, সেই সময় প্রতিবাদীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইট ছুঁড়ে বেধড়ক মারধোর চলে। এমন কী তাঁরা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেলেও ছুরি দিয়ে কানে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।
জানা যায়, আশ্রয় শিবিরেই রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ৩ জন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিত্সকরা জানান, জখমদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিত্সকদের নির্দেশমত এরপর তিন জনকেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন আক্রান্তদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয়রা বাসন্তী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বাসন্তী থানার পুলিশ। যদিও অভিযুক্তদের এখনও পর্যন্ত আটক কিংবা গ্রেফতার করা যায়নি। এলাকায় কেবল তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সূত্র :দ্য ওয়াল