Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
বিচিত্রতা

ভয়ংকর এক ভালোবাসা

ভয়ংকর এক ভালোবাসা

একাকিত্ব কাটাতে বিশাল এক অজগরকে পোষ্য নিয়েছিল মধ্য ত্রিশের ক্যাসান্দ্রা। বার হারবার নামে ছোট্ট ছিমছাম শহরটিতে পরিচ্ছন্ন এক বাসায় থাকত তারা। পোষা প্রাণী কেন্দ্র থেকে রেগি নামে ওই অজগরটিকে এনেছিলেন তিনি। এরপর তাদের মধ্যে অভূতপূর্ব সখ্যতা গড়ে ওঠে।

একসময় ক্যাসান্দ্রার মনে হতে লাগল, রেগি না থাকলে তার জীবনটা অসম্পূর্ণ থাকত। যেভাবে রেগি তার দিকে তাকায়, তার কথা শোনে, তা দেখে ক্যাসান্দ্রার প্রতিবেশীরাও রীতিমতো হতবাক! তবে ক্যাসান্দ্রা তখনো বোঝেনি তাদের এ ভালোবাসা যে ‘ভয়ংকর ভালোবাসা’। উল্টো ক্যাসান্দ্রা খুব ভালো অনুভব করত এই ভেবে যে, রেগি অনেক শান্ত আর ঝামেলাবিহীন। অন্তত পাশের বাড়ির পোষা কুকুরের মতো সারা দিন ঘেউ ঘেউ করে মানুষজনকে জ্বালায় না।

একসময় তার মনে হলো, সারা দিন যদি তারা একসঙ্গে থাকতে পারে, তবে রাতে কেন নয়। এরপর সে রেগিকে তার বিছানায় নিয়েই ঘুমাতে শুরু করল। ক্যাসান্দ্রার সারা শরীরে পেঁচিয়ে রেগিও বেশ নিশ্চিন্তে ঘুমাত। এভাবে তাদের দিন, রাতগুলো বেশ ভালোই কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু একদিন ক্যাসান্দ্রা লক্ষ করল যে রেগি কিছুই খাচ্ছে না। তাজা মুরগি, প্রিয় খরগোশ- কোনো কিছুই তাকে আকৃষ্ট করছে না। সারা রাত সে একদৃষ্টে শুধু ক্যাসান্দ্রার দিকেই তাকিয়ে থাকে।

অসুখ-বিসুখ করল কি না, দেখতে দেরি না করে সে রেগিকে নিয়ে গেল পশুচিকিৎসকের কাছে। সেখানে ড. হ্যানসেন অজগরটিকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেন। কিন্তু এর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে তিনি যা জানালেন, সে জন্য ক্যাসান্দ্রা একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। আল্ট্রাসাউন্ডের রিপোর্টে ড. হ্যানসেন তাকে দেখালেন যে, রেগির পাকস্থলী একেবারেই শূন্য, যা কোনো অজগরের পক্ষে মোটেই স্বাভাবিক নয়। আর এই পাকস্থলী শূন্য করেছে সে ইচ্ছা করেই। কারণ সে বেশ বড় একটা মিল টার্গেট করেছে।

কিন্তু কী সেই মিল? কোথায় পাবে সে বড় মিল? ক্যাসান্দ্রা তাকে তার প্রিয় সব ধরনের খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে ইতিমধ্যেই। এরপর ড. হ্যানসেন জানালেন, রেগি ক্যাসান্দ্রাকেই বড় মিল হিসেবে টার্গেট করেছে। আর সে কারণেই প্রতি রাতে তাকে পেঁচিয়ে তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের মাপ নেয়। একদৃষ্টে তাকিয়ে থেকে সেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে।

এ কথা শুনে ক্যাসান্দ্রার হৃদয় ভেঙে গেলেও সে এত সহজে রেগিকে অবিশ্বাস করতে চাইলেন না। তাই তো রাতে নিজের খাটে একটা প্লাস্টিকের ম্যানিকুইনকে নিজের জামা-কাপড় পরিয়ে, নিজের পারফিউম দিয়ে শুইয়ে রেখে দিল। আর নিজে ঘরের কোনায় লুকিয়ে থেকে চুপচাপ দেখতে লাগল রেগির কাণ্ড। একসময় রেগি বিছানায় উঠল। ধীরে ধীরে ক্যাসান্দ্রা ভেবে ম্যানিকুইনের পুরো শরীরটি পেঁচাতে লাগল। এরপর সেটিকে এত জোরে চাপ দিল যে, খটখট করে প্লাস্টিকের ম্যানিকুইন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।

ক্যাসান্দ্রা বুঝতে পারল যে ড. হ্যানসেনের কথাই ঠিক। রেগি পোষা হলেও আদতে সে বন্য প্রাণী। আর তার প্রবৃত্তিও প্রবল। তাই তার ভালোবাসা আসলে ‘ভয়ংকর ভালোবাসা,’ যা সে ভাবতেই পারেনি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button