সাহিত্য

বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা আলোচনাসত্ৰ

দীপাঞ্জন দে

বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা আলোচনাসত্ৰ

৮ মার্চ ২০২৪ (শুক্রবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা বিষয়ক এক আলোচনাসত্র ও লেখক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। এদিন গোবরডাঙা গবেষণা পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হলো ‘বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা (প্রথম খণ্ড)’ গ্রন্থটি। এই গ্রন্থে নদিয়া জেলা নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে, যা সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করল।

এই সুবৃহৎ গ্রন্থটি প্রকাশের জন্য ৮ মার্চ দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়। এদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল গেটওয়ে পাবলিশিং হাউস। সহযোগিতায় ছিল গোবরডাঙা গবেষণা পরিষৎ। এদিনের অনুষ্ঠানের সভামুখ্য ছিলেন লেখক সাগরময় অধিকারী। তাঁর সঙ্গে এদিন অনুষ্ঠানমঞ্চে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে ছিলেন বিজ্ঞান সংগঠক দীপককুমার দাঁ এবং লেখক মণিমোহন ধর। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন গোবরডাঙা গবেষণা পরিষদের কর্ণধার দীপককুমার দাঁ। তিনি বাংলা ভাষায় বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসকে তুলে ধরার এই প্রয়াসকে কুর্ণিশ জানিয়ে সভায় আগত সকল ব্যক্তিদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য স্বাগত জানান।

বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা আলোচনাসত্ৰ

বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসের উপর এই সুবৃহৎ গ্রন্থের প্রকাশক হলো উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার গেটওয়ে পাবলিশিং হাউস। আপাতত ‘প্রথম খণ্ড’ হিসেবে তারা এই বৃহৎ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছেন। ‘বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা (প্রথম খণ্ড)’ গ্রন্থটির সম্পাদক তাঁর বক্তব্য রাখার সময় এই গ্রন্থ নির্মাণের পশ্চাৎপট সকলের সামনে সংক্ষেপে তুলে ধরেন। প্রকাশক এই বৃহৎ গ্রন্থ নির্মাণে স্বতঃস্ফূর্ত সক্রিয়তা দেখিয়েছেন বলে, সম্পাদক এদিন তাঁদের প্রতি ধন্যবাদ ব্যক্ত করেন। সাহিত্যিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী এবং শিল্পী সুশোভন অধিকারীর প্রতি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।

পাশাপাশি এই গ্রন্থ নির্মাণে যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন সম্পাদক তাঁদের কথা উল্লেখ করেন এবং পঁয়ষট্টিজন প্রবন্ধ লেখকের লেখাগুলির বিশ্লেষণ করেন। সম্পাদক এদিন সভমঞ্চ থেকে কবি রামকৃষ্ণ দে এবং লেখক সম্পদনারায়ণ ধরের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে গ্রন্থ নির্মাণে তাঁদের বিশেষ ভূমিকার কথা স্বীকার করে নেন। এরপর সেই মহেন্দ্রক্ষণ আসে, যখন গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিকভাবে আবরণ উন্মোচিত হয়। সাগরময় অধিকারী, দীপককুমার দাঁ এবং মণিমোহন ধরের হাত দিয়ে গ্রন্থটি প্রকাশ পায়। তাঁদের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন গ্রন্থটির প্রকাশক তন্ময় ধর এবং গ্রন্থের সম্পাদক দীপাঞ্জন দে।

বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা আলোচনাসত্ৰ

সভামুখ্য সাগরময় অধিকারী তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সমকালীন লেখক ও পাঠক সমাজ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। বহু বিশিষ্টজন এদিনের লেখক সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। গোবরডাঙা রেনেসাঁ ইনস্টিটিউট-এর বর্তমান সভাপতি সুনীল বিশ্বাস তাঁর বক্তব্যে আগামীতে ‘বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা’-এর দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব রাখেন। সমাজসেবী মোহর মণ্ডল সীমান্তবর্তী এলাকার সমস্যাগুলিকে আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চায় লিপিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

উত্তর ২৪ পরগনার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মৃণালকান্তি সরকার দুই মলাটের ভিতর বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসকে সযত্নে লিপিবদ্ধ করার এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। এরপর প্রকাশনা সংস্থার পক্ষ থেকে সকল লেখকের হাতে গ্রন্থের সৌজন্য সংখ্যা তুলে দেওয়া হয় এবং লেখকদের থেকে বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা সম্পর্কে তাঁদের মূল্যবান মতামত শুনে নেওয়া হয়।

লেখকদের মধ্যে থেকে নিজ নিজ অভিজ্ঞতার কথা এদিন ব্যক্ত করেন অমিতাভ মুখোপাধ্যায়, সুজিতকুমার বিশ্বাস, দেবদুলাল কুণ্ডু, শুভাশিস ঘোষ, সবিতা বিশ্বাস, তানিয়া ব্যানার্জী, রাই পারমিতা আইচ, শাশ্বতী রায় এবং সুমিতা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে আগত অভ্যাগতরা বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থটি আগামীদিনে বিশেষ জায়গা করে নেবে বলে মনে করেন।

অনুষ্ঠানস্থল থেকে অনেকে বইটি সংগ্রহ করেন। এদিনের অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন দীপাঞ্জন দে। অনুষ্ঠানের শেষপর্বে লেখক মণিমোহন ধর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এর মধ্যে দিয়ে এদিনের গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button