ঝাড়গ্রামরাজনীতি

‘পিসি-ভাইপো’-র কোম্পানিকে উৎখাতের ডাক শুভেন্দু-দিলীপের

স্বপ্নীল মজুমদার

‘পিসি-ভাইপো’-র কোম্পানিকে উৎখাতের ডাক শুভেন্দু-দিলীপের - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: বিধানসভা ভোটে ছক্কা মেরে জঙ্গলমহলের সর্বত্র পদ্মফুল ফোটানোর বার্তা দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়ার মহাপাল মাঠে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যৌথ সভা করেন শুভেন্দু।

ওই সভায় শুভেন্দু ও দিলীপের হাত ধরে ৬৫ জন তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। যোগদান‌কারীদের বেশির ভাগই শুভেন্দুর অনুগামী। এদিন সভায় ফের নাম না-করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোলাবাজ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, প্রশাসনিক ভাবে আমরা তৃখণ্ডিত। কিন্তু মনে প্রাণে আমরা মেদিনীপুর জেলার অধিবাসী। আমার নেতা রাজ্য সভাপতি গতকাল আমাকে টেলিফোন করে বললেন, তাঁর বাড়ির কাছে যোগদান সভা আছে। সেই সভায় আসতে হবে। আমি আমার সভাপতির নির্দেশ পালন করার জন্যে এসেছি। আমরা অনেক আগে চলে এসেছি।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তোলাবাজ ভাইপোর পার্টি তৃণমূলকে হারাতে হবে। কয়েকদিন আগে আমি ঝাড়গ্রামে কার্য কর্তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য এসেছিলাম। সেদিন আমি বলেছিলাম জেলার ৪ টি বিধানসভা আসনের প্রতিটিতে অর্ধ লক্ষ করে ভোটে এই আমপানের টাকা চোর, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা চোর, একশো দিনের কাজের টাকা চোর, এমনকী স্বচ্ছভারত মিশনে শৌচাগার হাওয়া করে দেওয়া তৃণমূলকে একেবারে হাওয়া করে দিতে হবে ভোটের মেশিনে। জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দিন রাত এক করে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন শুভেন্দু। বিনিময়ে পিসি-ভাইপোর কোম্পানি থেকে কেবল অপমানিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এই অপমান গ্রামবাংলার অপমান বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন : ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুরে শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি মুকুল রায়ের

অপমানের বদলা নিতে পিসি-ভাইপোর কোম্পানিকে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ডাক দেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর অভিযোগ, কেন্দ্রের প্রকল্পগুলি নাম বদল করে তৃণমূল ডানে ও বামে বিডিও ও পুলিশকে রেখে নারকেল ফাটিয়ে নিজেদের বলে চালাচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারত এ রাজ্যে নেই, কৃষক সম্মাননিধি যোজনা রূপায়িত না করে ৭৩ লক্ষ চাষিকে বঞ্চিত করেছে এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার। শুভেন্দু বলেন, আমার সম্পর্কে বলছে বিজেপির সঙ্গে কী ডিল হয়েছে। হ্যাঁ ডিল হয়েছে, এসএসসির পরীক্ষা বিজেপি সরকার এলে প্রত্যেক বছর করাবে। চাকরিতে নিয়োগ হবে স্বচ্ছতা মেনে। ডিল হয়েছে টেট পরীক্ষা হবে। কলেজ সার্ভিস কমিশন, মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন, পিএসসি পরীক্ষায় খাতা বদল হবে না।

আমি বলে ফেলেছিলাম তোলাবাজ ভাইপো হটাও, গায়ে লেগে গিয়েছিল খুব জোরে। আগামী দিনে এই চোরদের উৎখাত করতে বিজেপিকে জেতাতে হবে। দিলীপ ঘোষ সুখময় শতপথীর নির্দেশে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জঙ্গলমহলে যে প্রান্তে শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকবেন, চেনা হাতের তালু, বাইক নিয়ে ঘুরলেও আমার অসুবিধে হবে না। বিজেপি এখানে অনেক শক্তিশালী। আরও শক্তিশালী করব। যেখানে পঞ্চাশ হাজারে জেতার কথা আশি হাজারে জেতাব।

আরও পড়ুন : ‘ভাইপো মানে অভিষেক’,নাম করেই আক্রমণ লকেটের

মকর পরবে প্রতি বছর আসতাম। এই পিসি ভাইপো কোম্পানি আমাকে জঙ্গলমহলে আসতে দেয়নি। এবার মকরের দিনে আসব পিঠে তুলে নিয়ে যাব গাড়িতে। খেতেখেতে বাড়ি যাব। টুসুতে আসি, করমে আসি, বাঁদনাতেও আসি। জঙ্গলমহলের মানুষের সঙ্গে ঝুমুরগানও শুনি। মাদল ধামসার সঙ্গে নাচি। এখানকার সহজ সরল মানুষই প্রতিবাদের অভিমুখ। আপনারা পঞ্চায়েতে জিতিয়েছেন, লোকসভায় জিতিয়েছেন। এবার বিধানসভায় পদ্মফুলে ভরিয়ে দেবেন।

সভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, তৃণমূলকে বিদায় করতেই হবে। তৃণমূলের ভাইরাসের আক্রমণে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। আমরা অখণ্ড মেদিনীপুরের ৩৫টি আসনেই জিতব। আমাদের এখান থেকে গরু, বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে। পকেট ভরছে তৃণমূলের নেতাদের। বাংলার দারুণ পরিবতZর্ন করেছে ওরা। দিদি থেকে পিসি হয়ে গিয়েছেন। দিদির ভাইপো বিদেশি গাড়িতে চড়ছে। ৫-৭ কোটি টাকার বাড়িতে থাকছে। আর দিদির ছোট ছোট ভাইয়েরা পঞ্চায়েত থেকে পুরসভার কাউন্সিলারদের পরিবর্তন হয়েছে। সাইকেল থেকে মোটর সাইকেল হয়েছে। মোটর সাইকেল থেকে চারচাকা গাড়ি হয়েছে। মাথায় চুলে তেল জুটত না এখন শ্যাম্পুর চুল উড়ছে। গালে মাংস ছিল না। গালে মাংস হয়েছে। ক্রিম মাখছে। এখানকার তৃণমূলের নেতাদের উন্নয়ন হয়েছে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button